বরগুনায় মাদক মামলার আসামির শরীরজুড়ে নির্যাতনের চিহ্নের পাশাপাশি হাত ভাঙার রহস্য উদঘাটনের জন্য জুডিশিয়াল তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে স্বপ্রণোদিত হয়ে বরগুনার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. মাহবুব আলম এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে বরগুনা পৌরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের মৃত বিনয় চন্দ্র সরকারের ছেলে শিশির চন্দ্র সরকারকে (২৪) গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর শিশিরের কাছ থেকে ৫ পিস ইয়াবা উদ্ধারের অভিযোগে মামলা দায়ের করে ওইদিন সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করে পুলিশ। পরে আদালত শিশিরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

শিশিরকে আদালতে হাজির করার আগে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে নিয়ে যায় পুলিশ। এ সময় শিশিরের শরীরজুড়ে অমানুষিক নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পান তার স্বজনরা। নির্যাতনের ফলে শিশিরের ডান হাত ভেঙে গেছে বলেও অভিযোগ শিশিরের স্বজনদের।

এরপর বৃহস্পতিবার শিশিরের জামিন আবেদন করলে আদালত জামিন মঞ্জুর করার পাশাপাশি শিশিরের শরীরজুড়ে আঘাতের রহস্য উদঘাটনের জন্য জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।

শিশিরের বড় ভাই তুষার বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে বাসার সামনে থেকে শিশিরকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু মামলায় ২১ তারিখ ভোর পাঁচটায় শিশিরকে আটকের সময় দেখানো হয়। শিশিরকে আটকের পর রাতভর শিশিরের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায় পুলিশ।

তুষার আরও বলেন, পুলিশের নির্যাতনে শিশিরের ডান হাত ভেঙে গেছে। এছাড়াও সমস্ত শরীরে কালো দাগ বসে গেছে। নির্যাতনের পর ঠিকমতো চিকিৎসাও দেয়নি পুলিশ। শিশিরের কাছে মাদকদ্রব্য ছিল না দাবি করে তুষার বলেন, ওর কাছে মাদক ছিল না বলেই ওকে মারধর করা হয়েছে। এরপর পাঁচ পিস ইয়াবা দিয়ে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

শিশিরের আইনজীবী আবদুল ওয়াসিম মতিন বলেন, শিশিরের জামিনের জন্যে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করি। আবেদনের সঙ্গে শিশিরের শরীরজুড়ে অমানুষিক নির্যাতনের চিহ্নের কিছু তথ্যউপাত্ত আদালতে পেশ করি। এরপর আদালত শিশিরের জামিন মঞ্জুরের পাশাপাশি শরীরজুড়ে নির্যাতনের চিহ্নের রহস্য উদঘাটনের জন্য জুডিশিয়াল তদন্তের নির্দেশ দেন।

বরগুনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম তরিকুল ইসলাম বলেন, আটকের সময় দৌড়ে পালাতে গিয়ে আসামি শিশির আহত হয়। পরে তাকে আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। কাউকে থানায় নির্যাতন করা হয়নি।

এ বিষয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিকের নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এমএসআর