কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চলন্ত ট্রেন থেকে এক নারী যাত্রীর হ্যান্ডপার্স ছিনিয়ে নিয়ে নির্বিঘ্নে নেমে যাচ্ছে এক যুবক। এমনই একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা থেকে সিলেটগামী আন্তনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। 

ট্রেনটি কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার জংশনের সীমানা অতিক্রমকালে ফিল্মি কায়দায় নারী যাত্রীর হ্যান্ডপার্স ছিনিয়ে নিয়ে যায় ওই যুবক। তখন ভুক্তভোগী কিংবা আশপাশের যাত্রীদের এ ঘটনা চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। তবে একই ট্রেনে থাকা অন্য এক যাত্রীর মোবাইল ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এ দৃশ্য। ছবিতে ছিনতাইকারী যুবকের চেহারা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

এ ঘটনার কয়েকটি ছবি বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্রেন্ডস ফোরাম, বাংলাদেশ রেলওয়ে হেল্পলাইন, বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল, তিতাস কমিউটার, ভৈরব পরিবার গ্রুপসহ ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ ও গ্রুপে ভাইরাল হয়েছে। ছবিগুলো দেখে রেলওয়ে পুলিশ ও থানা পুলিশ সহজেই তাকে ধরতে পারবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ে হেল্পলাইন গ্রুপে হোসাইন মোহাম্মদ এহসান নামে একজন মন্তব্য করেছেন, ভৈরবে এটা নিত্যদিনের ঘটনা। 

আসাদুজ্জামান এমরান নামে একজন মন্তব্য করেছেন, এখন কথা হইতেছে আশুগঞ্জ-ভৈরবে এমন কোনো লোক নেই যে ছেলেটাকে দেখেছে কিংবা চিনে। 

ভৈরব পরিবার গ্রুপে একজন মন্তব্য করেছেন, এই ছবি দেখে অনেকে চিনবে তাও কেউ কিছু বলবে না! এই কারণে দিন দিন ভৈরবের অবস্থা খারাপ হচ্ছে।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবি দেখে আমরা এ নিয়ে কাজ শুরু করেছি। ছবি দেখে ইতোমধ্যে ছিনতাইকারীকে শনাক্ত করা হয়েছে। ছবির ব্যক্তির নাম সানী প্রকাশ। তার বাড়ি ভৈরব পৌর শহরেই। সে পৌর শহরে শ্বশুরবাড়িতে থাকে। আমরা ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করেছি। কিন্তু ছবি ভাইরাল হওয়ায় তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভৈরবের কালিকা প্রাসাদ এলাকায় এগারোসিন্দুর গোধুলি ট্রেনে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে মমতাজ মারোয়া (৫০) নামে এক নারী আহত হন। তিনি কুলিয়ারচর প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি এবং দৈনিক ইত্তেফাকের কুলিয়ারচর উপজেলা প্রতিনিধি মো. রফিক উদ্দিনের স্ত্রী।

এর আগে ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে ঢাকাগামী আন্তনগর কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন ভৈররের লক্ষ্মীপুর লেভেলক্রসিং পার হওয়ার সময় এলোপাতাড়ি পাথর নিক্ষেপ শুরু হয়। এ সময় জানালার কাচ ভেঙে সহকারী চালক কাউসার আহমেদের দুই চোখ রক্তাক্ত জখম হয়।

পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার দুটি চোখই মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। পরে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে রেলওয়ে পুলিশ সন্দেহভাজন ১৫ শিশু-কিশোরকে আটক করলেও শেষ পর্যন্ত তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

এসকে রাসেল/আরএআর