ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে থাকা ঝুমন দাস হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর কারামুক্ত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান। 

কারাগার থেকে বের হয়ে প্রথমে কারা ফটকে থাকা মা নিভা রানী দাসকে প্রণাম করেন ঝুমন। এ সময় মা নিভা রানী ছেলেকে চুম্বন করে গলায় জড়িয়ে ধরেন। ঝুমন দাস তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যম কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক কর্মীসহ তার মুক্তির জন্য সহযোগিতাকারী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। 

এ সময় ঝুমন দাস বলেন, ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাবরণ করেছেন। আমি সামান্য মানুষ, ২০০ দিন কারাভোগ করেছি। সকলের প্রচেষ্টায় বেরিয়ে আসতে পেরেছি। 

ঝুমনের মা নিভা রানী দাস বলেন, আমরা খুশি, ছেলেটি নিঃশর্ত মুক্তি পেলে আরও বেশি খুশি হতাম। 

গত ছয় মাস আতঙ্ক, উৎকণ্ঠায় দিন কেটেছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা নিরাপত্তা চাই, পরিবার ও ছেলের নিরাপত্তা দেওয়ার অনুরোধ জানাই। 

সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারের জেলার শরিফুল ইসলাম বলেন, আদালতের আদেশে ঝুমন দাসকে  মুক্তি দেওয়া হয়েছে। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ঝুমনকে শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জামিন দেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের আদেশে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতের অনুমতি ছাড়া আগামী এক বছরের জন্য নিজ জেলা সুনামগঞ্জের বাইরে যেতে পারবেন না ঝুমন দাস। 

মঙ্গলবার বিকেলে ঝুমন দাসের জামিন সংক্রান্ত আদেশ সুনামগঞ্জ আদালতে পৌঁছায়। সন্ধ্যায় এ সংক্রান্ত কাগজ কারাগারে পৌঁছালে কারাগার থেকে মুক্তি পান ঝুমন দাস।

উল্লেখ্য, সাবেক হেফাজত নেতা মামুনুল হকের বক্তব্যের প্রতিবাদে ঝুমন দাস গত ১৬ মার্চ ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। ওই ঘটনায় ধর্মীয় উসকানির অভিযোগে মামুনুল হকের অনুসারীরা রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং পুলিশ ওই রাতেই ঝুমন দাসকে গ্রেপ্তার করে।

প্রায় এক সপ্তাহ পর ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ঝুমন দাসের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে। ওই মামালায় ছয় মাসেরও বেশি সময় কারগারে ছিলেন ঝুমন দাস।

সাইদুর রহমান আসাদ/আরএআর