মনোনয়নপত্র জমা দিয়েই তোরণে চেয়ারম্যান, সমালোচনার ঝড়
আসন্ন দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে রায়গঞ্জের পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে রফিকুল ইসলাম নান্নু মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। স্থানীয় এমপির আগমন উপলক্ষে তিনি নির্মাণ করেছেন সুসজ্জিত তোরণ। আর এখানেই বিপত্তি বাজিয়েছেন তিনি।
নির্বাচনের আগেই নিজেকে তোরণে চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা দিয়ে জন্ম দিয়েছেন সমালোচনার। যা নিয়ে স্থানীয় ভোটার ও রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে রাতের আঁধারে আবার বদলে ফেলা হয়েছে সেই তোরণের ব্যানার।
বিজ্ঞাপন
ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর পাঙ্গাসী ইউনিয়নে। চেয়ারম্যান পরিচয় দিয়ে তোরণ নির্মাণ করা ওই ব্যক্তি নিজের প্রতিষ্ঠিত একটি কলেজের অধ্যক্ষও।
শুক্রবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাঙ্গাসী ইউপির মূল ফটকের সামনে পাঙ্গাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভায় স্থানীয় এমপি অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজের আগমন উপলক্ষে করা একটি শুভেচ্ছা তোরণ তৈরি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
তোরণের নিচে ছবি ব্যবহার করে দুই অংশে লেখা রয়েছে ‘শুভেচ্ছান্তে রফিকুল ইসলাম নান্নু, চেয়ারম্যান ৮ নং পাঙ্গাসী ইউনিয়ন পরিষদ, রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ’। যা নিয়ে এলাকায় এখন একটিই প্রশ্ন সবার মুখে মুখে ‘নির্বাচনের আগেই তিনি চেয়ারম্যান হলেন কীভাবে’?
নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক পাঙ্গাসী এলাকার অনেকেই জানায়, নান্নুকে যারা চেনেন তারা সবাই তাকে মাস্টার হিসাবেই চেনেন। তিনি কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে শুনিনি।
তবে এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম নান্নুর সঙ্গে কথা বলার জন্য তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি।
অন্যদিকে এ ঘটনায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন বর্তমান দায়িত্বে থাকা অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই তোরণ লাগানোর পর থেকেই নাগরিকরা আমাকে নানারকমের প্রশ্ন করছেন। বিশেষ করে পরিষদের ফটকের সামনেই তোরণটি নির্মাণ করায় প্রশ্নটা যেন আরও বেড়েছে।
পাঙ্গাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে তিনি এটা করে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
পাঙ্গাসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক বলেন, বিষয়টি আমি দেখেছি। তিনি এটা মোটেও ঠিক করেননি। তিনি কখনো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এবার হঠাৎ করে নিজেকে আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে এমপির ছবিসহ তোরণ লাগিয়েছেন। আবার নিজেকে চেয়ারম্যান হিসাবে পরিচয়ও দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ধাপে ৮৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ২৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের ৮৬তম সভা শেষে এ তথ্য জানান ইসি সচিব হুমায়ুন কবীর খন্দকার।
ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৭ অক্টোবর, মনোনয়নপত্র বাছাই ২০ অক্টোবর, বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর, আপিল নিষ্পত্তি ২৪ ও ২৫ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৬ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ২৭ অক্টোবর এবং ভোটগ্রহণ ১১ নভেম্বর।
শুভ কুমার ঘোষ/এমএসআর