পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে কবরস্থানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে নবজাতক শিশুর মরদেহ দাফন নিয়ে বিপাকে পড়ে একটি পরিবার। পরে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে শিশুটির মরদেহ দাফন করা হয়।

রোববার (০৩ অক্টোবর) রাতে উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা ও চরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, ভেড়ামারা ও চরপাড়া গ্রামের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার এবং কবরস্থান সংলগ্ন ১০ শতাংশ জায়গার দখলকে কেন্দ্র করে বিরোধ তুঙ্গে ওঠে। এ ঘটনার জের ধরে ভেড়ামারা কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সামাদ খাঁনের নির্দেশে তার অনুসারীরা চরপাড়া গ্রামের মৃত ব্যক্তিদের কবরস্থ করতে না দেওয়ার উদ্দেশ্যে কবরস্থানের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন। 

গতকাল রোববার সন্ধায় চরপাড়া গ্রামের মনিরুল ইসলামের নবজাতক শিশু সন্তান মারা যায়। রাতে মৃত শিশুটিকে কবরস্থ করতে এসে তিনি প্রায় তিন ঘণ্টা তালাবদ্ধ গেটের সামনে অপেক্ষা করেন। পরে চরপাড়া গ্রামের লোকজন নিরুপায় হয়ে ভাঙ্গুড়া থানা ও জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নবজাতকের মরদেহ দাফন সম্পন্ন করেন।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা কবরস্থান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা সামাদ খাঁন ঢাকা পোস্টকে বলেন, কবরস্থান সংলগ্ন এতিমখানার জমি নিয়ে বিরোধের কারণে চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি আপাতত সমাধান হয়েছে। এখন জমির সমস্যার সমাধান হলে তবে বিষয়টি স্থায়ী সমাধান হবে।

পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেদায়েতুল হক বলেন, এতিমখানার জমির বিরোধ নিয়ে ভেড়ামারা গ্রামের উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছেলে কবরস্থানে তালা দিয়ে মরদেহ দাফনে বাধা দিয়েছিল। বিষয়টি সমাধানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। আশা করছি আর সমস্যা হবে না।

ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মরদেহ দাফনে বাধা দেওয়ার বিষয়টি জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করে জানানো হয়। পরে থানায় বিষয়টি জানানোর পরপরই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ওই কবরস্থান নিয়ে পরবর্তীতে যেন কোনো সমস্যা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। 

রাকিব হাসনাত/আরএআর