রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকামুখী যানবাহনের দীর্ঘ সারির কারণে পাঁচ কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়েছে। দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলো রাত থেকেই ফেরি পারের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করায় এ যানজট হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা।

বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) সকালে সরেজমিনে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় দেখা যায়, ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় ৬ শতাধিক দূরপাল্লার বাস, পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি তৈরি হয়েছে।

এ ছাড়া ঘাট এলাকায় ব্যক্তিগত যানবাহনগুলোর চাপও চোখে পড়ার মতো ছিল। দীর্ঘ সময় ঘাট এলাকায় আটকে থেকে সাধারণ যাত্রীরা ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে।

ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ২০টি ফরি চলাচল করছে। এর মধ্যে ১২টি বড় রো রো ফেরি এবং ৮টি ছোট ইউটিলিটি ফেরি। ফেরির সংখ্যার তুলনায় ঘাটসংখ্যা কম থাকায় ফেরি সহজে ঘাটে ভিড়তে পাড়ছে না। একটি ফেরি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার পরই অন্য একটি ফেরি ঘাটে ভিড়তে পারছে। এ কারণে সময় বেশি লাগায় ঘাটে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।

এ ছাড়া দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে পানি কমে যাওয়ায় নাব্যতাসংকট দেখা দিয়েছে। এই নাব্যতা সংকট মোকাবিলায় নদীতে ড্রেজিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। ফলে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমি ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি জরুরি কাজ থাকায় আমাকে ঢাকা যেতে হচ্ছে। কিন্তু ঘাটে এসে ৬ ঘণ্টা ধরে আটকে আছি। সময়মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে না পারলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।

আরেক যাত্রী তুহিন ইসলাম বলেন, অসুস্থ বাবাকে ডাক্তার দেখাতে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছি। সাতক্ষীরা থেকে রাতের নাইট কোচে উঠেছিলাম। ভোর সাড়ে ৬টা নাগাদ গোয়ালন্দ মোড় পার হয়ে ঘাট এলাকায় এসে সিরিয়ালে আটকে এখন বেলা ১১টা বাজে। ভ্যাপসা গরমে আমার বাবা আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নদীতে ড্রেজিংয়ের জন্য ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আবার আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় ঘাট সংখ্যাও কম। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা যানবাহনগুলোকে ফেরি পারের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে আশা করছি দ্রুতই এই সমস্যার সমাধান হবে।

মীর সামসুজ্জামান/এনএ