আগাম শীত ও আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হঠাৎ দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বাড়তে শুরু করেছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা। জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়েরিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে প্রতিদিনিই পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। হঠাৎ করে রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া হাসপাতালে জায়গা কম থাকায় রোগীদের মেঝে ও বারান্দায় থেকেও চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তরা সেবা নিচ্ছেন। যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই অবস্থা। দিন দিন সেখানেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। ১শ শয্যা বিশিষ্ট পঞ্চগড় সদর আধুনিক হাসপাতালে সব ধরনের রোগী আসলেও বেশি আসছেন শিশু ও বয়স্করা।

পঞ্চগড় থেকে হিমালয় খুব কাছে হওয়ায় এ জেলায় মৌসুমের শুরুতেই শীত নামে। আর আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে কখনও ঠান্ডা, কখনও গরম পরিলক্ষিত হয়। এ কারণে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নারী, পুরুষ, শিশু ও বয়স্করা। তবে এত বড় জেলা শহরের হাসপাতালে একজন মাত্র শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ সবাই মিলে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন তারা। 

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রথম দিকে দিনে ১শ থেকে দেড়শ রোগী আসলেও তা দিন দিন বাড়ছে। এ ছাড়াও গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন ২৮০ থেকে ৩০০ জন নারী, ১২০ থেকে ১৪০ জন পুরুষ ও ১৫০ থেকে ১৬০ জন শিশু বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। সে হিসাবে গত এক সপ্তাহে বর্হিবিভাগে প্রায় ৩ হাজার নারী, ৯৮০ জন পুরুষ ও ১১২০ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছেন। 

মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসা সাম্মী আক্তার বলেন, আমার মেয়ে ঠান্ডাজনিত জর-স্বর্দিতে আক্রান্ত তাই তাকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। ৪ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি। আগের চেয়ে অনেক ভাল এখন। তবে হাসপাতালে মহিলা ও শিশু রোগী এক সাথে থাকায় বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ও জুনিয়র কনসাল্টেন্ট ডা. মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তন ও শীতের কারণে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিন দেড় থেকে দুই শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যাদের সমস্যা বেশি তাদের হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শসহ ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে মুক্ত থাকতে সকল প্রকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। 

পঞ্চগড় সিভিল সার্জন ডা. মো. ফজলুর রহমান বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হঠাৎ ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে একজন মাত্র শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকায় আমরা হিমসিম খাচ্ছি। তবে আবাসিক মেডিকেল অফিসারদের মাধ্যমে সেবার মান বৃদ্ধি করছি।

রনি মিয়াজী/আরআই