শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীনদের জমি ও গৃহ হস্তান্তর করা হয়েছে

‘‌২২ বছর হচ্চে মানষের বাড়ির উটানোত থাকি। জারে পুতিদিন আতোত কাঁপি। হামার কোনো ঘর বাড়ি লাই। সারাদিন মানষের কাছে চ্যায়েচিন্তে খাই। ছোল দুডা বড় হচে, বিয়ে করাচি। ওরকেরেও থাকার জাগা লাই। এ্যাদ্দিন পর বাড়ি পানু। শেকের বেটির দয়া হচে। আল্লাহ ওক ভাল থুক।’ আবেগাপ্লুত হয়ে কথাগুলো বলছিলেন ৭০ বছর বয়স্ক চুন্নু মিয়া। 

চুন্নু মিয়া সদরের শেখেরকোলা ইউনিয়নের নুরুইল গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী শিউলীও বয়সের ভারে চলাফেরা করতে পারেন না। এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে মামুন কাগজের কার্টনের কাজ করেন। অন্যের বাড়িতে সেও থাকে ছেলে ও স্ত্রী নিয়ে।  

চুন্নু মিয়া আরও বলেন, ‘হামার এ্যাকন থাকার জাগা পানু। মানষের বাড়িত আর থাকা লাগবি না। শ্যাষ বয়োসত ছোল পোলোক লিয়ে থাকমো। শেকের বেটি হাসিনা হামাক দিচে তা হামি কোনুদিন ভোলমো না।’

শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে শুরু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে ভূমিহীনদের জমি ও গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রম। দুপুর ১২টায় বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে সদরের শেখেরকোলা ইউনিয়নের ১৮জন ভূমিহীনের মাঝে গৃহ হস্তান্তর করা হয়। 

সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আবু সুফিয়ান সফিকের সভাপতিত্বে ও উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের পরিচালনায় হস্তান্তরকালে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সাংসদ খাদিজা খাতুন শেফালী, জেলা পরিষদের সদস্য মাফুজুল ইসলাম রাজ, মাহফুজা খানম লিপি, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম ইকবাল, ডালিয়া নাসরিন রিক্তাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায় গৃহ হস্তান্তর কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক, জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বিপিএম বার, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুনজিল আলী সরকার, পৌর মেয়র মতিউর রহমান মতি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মমতাজুর রহমান।

এবার ১ হাজার ৪৫২ জন গৃহহীন পাচ্ছেন জমি ও গৃহ। মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে বগুড়ার ১২ উপজেলার গৃহহীনরা এই বাড়িগুলো পাচ্ছেন। এই গৃহগুলো নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ২৪ কোটি ৮২ লাখ ৯২ হাজার টাকা। 

বগুড়া সদরে ২৫০টি, শাজাহানপুর ১৫টি, শেরপুরে ১৬৩টি, ধুনটে ১০১টি, সারিয়াকান্দিতে ১০৭টি, সোনাতলায় ১২৫টি, গাবতলীতে ৪৫টি, শিবগঞ্জে ১৮০টি, আদমদিঘীতে ১০০টি, দুপচাঁচিয়াতে ১৩৩টি, কাহালুতে ৭৭টি, নন্দীগ্রামে ১৫৬টি গৃহ নির্মাণ করা হয়েছে। যা ওইসব এলাকার ভূমি ও গৃহহীনরা পাবেন। 

এছাড়াও বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলায় কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের শনপচা মােল্লাপাড়ায় ১০টি ব্যারাকে ৫০টি পরিবার, নান্দিনার চরে ১৬টি ব্যারাকে ৮০টি পরিবার এবং চন্দন বাইশা ইউনিয়নের বানিয়াপাড়ায় ২৪টি বারাকে ১২০টি পরিবারকে গৃহ দেওয়া হবে।

এসপি