নোয়াখালীর বাণিজ্যিক শহর চৌমুহনীতে এবার প্রথম কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৩ অক্টোবর) সকালে চৌমুহনী বিজয়া সর্বজনীন দুর্গামন্দিরে পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে মাতৃরূপে পূজা করা হয়।

শাস্ত্র মতে, পাঁচ বছরের যে শিশুকে মাতৃরূপে পূজা করা হয় তাকে সুভগা নামে অভিহিত করা হয়। আয়োজকরা বলছেন, এ পূজার লক্ষ্য নারীকে মর্যাদা দেওয়া। সুষ্ঠুভাবে কুমারীপূজা সম্পন্ন করতে পারায় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আয়োজকরা।

আয়োজক রাজীব ঢাকা পোস্টকে বলেন, সমাজে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, অবজ্ঞা, নির্যাতনের প্রতিবাদী প্রতীক, সচেতনতা তৈরিসহ নারীকে ধর্মীয়ভাবে মর্যাদা দেওয়ার জন্য এ পূজার আয়োজন করা হয়েছে।

বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ সনাতনী ফাউন্ডেশনের সভাপতি জয় ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবারের আয়োজন গতবারের চেয়ে অনেক ভালো। জেলায় এবারই প্রথম কুমারীপূজা হয়েছে। নারীরা সমাজে ব্যাপকভাবে নিগৃহীত হচ্ছে। এ অবস্থায় কুমারীপূজা নারীর প্রতি সম্মান বাড়াবে। ধর্মীয়ভাবে নারীকে মর্যাদা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কুমারীপূজা করা হয়।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কিশোর চন্দ্র শীল ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কুমারীপূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মণ্ডপে নিয়ন্ত্রিতভাবে মানুষের সমাগম করা হয়েছে। এ ধরনের পূজা সচেতনতা বাড়াবে, নারীকে সম্মান করতে শেখাবে এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধে ভূমিকা রাখবে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা পেলে আশা করছি শারদীয় দুর্গাপূজা ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারব।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি মাখন লাল দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বছর সদর উপজেলাসহ জেলার ৯ উপজেলার ১৬৯টি পূজামণ্ডপে প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা পূরাকীর্তি, মন্দিরসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক পটভূমির আদলে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। 

জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বিঘ্নে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তামূলক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ নির্বিঘ্নে তাদের উৎসব পালন করতে পারবে। এ ছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এটা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে জেলা প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে গত বছরের তুলনায় এবারের পূজা সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আশা করছি এবারের পূজায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।

হাসিব আল আমিন/এসপি