হুশিয়ার আলীর ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে বুধবার (১৩ অক্টোবর) বসতে হলো বিয়ের পিঁড়িতে। খবর পেয়ে প্রশাসন ঘটনাস্থলে যায়। করা হয় ১০ হাজার টাকা জরিমানা। হুশিয়ার আলীকে ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না মর্মে স্বাক্ষর করান অঙ্গীকারনামায়। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের নদীরচর গ্রামে।

কিন্তু দিন শেষে রাত নামে। হুশিয়ার আলী আর হুঁশিয়ার থাকেননি। ঘাপটি মেরে বসে থেকে রাতের আঁধারে বিয়ের সব আয়োজন শেষ করে মেয়েকে পাঠিয়ে দেন শ্বশুরবাড়িতে। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বউভাত খেতে গেছে কনের বাড়ির লোকজন।

গৌরারং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত সদস্য সাহেনা খাতুন বিয়ের ঘটনা সত্যতা নিশ্চিত করে ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। জরিমানা করা হয়েছে ১০ হাজার টাকা। প্রশাসন যাওয়ার পর রাতে কনেকে আবার বিয়ে দিয়ে বরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) বাল্যবিবাহ বন্ধ ও জরিমানা নিশ্চিত করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুনামগঞ্জ সদর আইডি থেকে ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, ‌বাল্যবিবাহের আয়োজন করায় গৌরারং ইউনিয়নে 'বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭' অনুযায়ী মেয়ের পিতাকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। এ ছাড়া মেয়ের বয়স আঠারো হওয়ার আগে বিয়ে দেবেন না মর্মে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন।'

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রবাসী বর সুমনের বাড়ি জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা ইউনিয়নের শেরমত্তপুর গ্রামে। বাবার নাম সিরাজুল ইসলাম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নদীরচর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, গতকাল দুপুরে প্রশাসন বিয়ে বন্ধ করেছে, জরিমানাও করেছেন। তবু রাতে কনেকে বরের বাড়িতে তুলে দিয়েছেন পিতা। আজ বউভাত খেতে গেছেন সবাই।

সুনামগঞ্জ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শরীফা আশ্রাফী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বাল্যবিবাহ আমাদের সমাজে একটি ব্যাধি। করোনাকালীন এ রকম বিয়ের সংখ্যা বেড়েছে। প্রশাসনের জরিমানা করার পরও গোপনে মেয়ের বিয়ে দেওয়া উদ্বেগজনক বিষয়।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরিয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। তবে এ ঘটনার পর যে রকম আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে রকম এগোব আমরা।

সাইদুর রহমান আসাদ/এনএ