অতীতে দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার না হওয়ার কারণে বর্তমানে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে দুর্গোৎসব উদযাপন করছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) রংপুর জেলার নেতারা। 

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ মন্তব্য করেন তারা। বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে না আসলে আগামীতে অসাম্প্রদায়িক চেতনা হুমকিতে পড়বে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন বাসদ নেতারা।

কুমিল্লা, চাঁদপুর, উলিপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ও পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।  

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের বাসদের রংপুর জেলা আহ্বায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুস। বক্তব্য দেন সদস্য সচিব মমিনুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক খেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক অমল সরকার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের রংপুর মহানগর সভাপতি যুগেশ ত্রিপুরা, ছাত্র ফ্রন্ট মহানগর কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক মৌসুমী আক্তার মৌ প্রমুখ।

কমরেড আব্দুল কুদ্দুস বলেন, অতীতে সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার না হওয়া বর্তমান পরিস্থিতি সৃষ্টির অন্যতম কারণ। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা ও স্বার্থরক্ষার রাজনীতির কারণে ধর্মীয় মূল্যবোধকে ব্যবহার করছে একটি বিশেষ গোষ্ঠী। অতীতে বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া প্রায় সব সাম্প্রদায়িক হামলায় দলীয় লোকজনের সম্পৃক্ততা ছিল। শুধু রাজনৈতিক ছত্রছায়াতেই নয় কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নমনীয় মনোভাবও সাম্প্রদায়িক হামলার পুনরাবৃত্তির কারণ।

নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের আসন্ন ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার খবরটি দুঃখজনক উল্লেখ করে বাসদ নেতারা বলেন, স্বাধীনতার চেতনা থেকে সরকার সরে এসেছে। দেশে ধর্মভিত্তিক ১৫টির বেশি রাজনৈতিক দল রয়েছে। গোপনে প্রকাশ্যে অনেক বড় বড় দলই এদের পৃষ্টপোষকতা করছে।

তারা আরও বলেন, ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে রাজনৈতিক সন্ধি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বসহ অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য হুমকি। ভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের ওপর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস মেনে নেওয়ার মতো নয়। অবিলম্বে কুমিল্লা, চাঁদপুর, উলিপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামন্ডপে সাম্প্রদায়িক হামলাসহ অতীতে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন নেতৃবন্দ।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর