গাজীপুর মহানগরের কাশিমপুর বাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) সকালে তিনটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় কাশিমপুর থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) সকালে ১৮ জনকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। পরে আদালত তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবে খোদা বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কাশিমপুর বাজারের শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও কাশিমপুর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাবুল রুদ্র, কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার পারিবারিক মন্দির পরিচালনাকারী সুবল চন্দ্র দাস ও পালপাড়া নামাবাজার এলাকার সর্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল পাল বাদী হয়ে ওই মামলা তিনটি করেছেন। প্রতিটি মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

দুই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তানভীর আহমদ জানান, শুক্রবার সকালে আদালতে গ্রেপ্তারকৃত ২০ জনের মধ্যে ১৮ জনের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালতের বিচারক তাদের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্য দুজনকে ঘটনার দিন আহত অবস্থায় আটক করা হয়েছিল। তারা সুস্থ হলে পরে তাদেরও রিমান্ড চাওয়া হবে।

সভাপতি বাবুল রুদ্র জানান, বৃহস্পতিবার সকালে পূজারিরা মন্দিরে পূজা-অর্চনা করছিলেন। সকাল ৭টার কিছু সময় পরে কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েক শ লোক লাঠিসোটা নিয়ে শ্রীশ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরে ঢুকে হামলা চালায়। তারা লক্ষ্মী ও অসুরের প্রতিমা ভাঙচুর করে চলে যায়। এতে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

একই দিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দেড়-দুই শ লোক কাশিমপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী সুবল দাসের পারিবারিক মন্দিরে এবং স্থানীয় পালপাড়া নামাবাজার সর্বজনীন মন্দিরে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা মন্দিরে থাকা সব প্রতিমা ভাঙচুর করে উল্টে ফেলে দেয় এবং শব্দযন্ত্রে ভাঙচুর চালায়। হামলার সময় ২০ হামলাকারীকে ধরে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় ও জেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। খবর পেয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম ও গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. জাকির হাসান (অপরাধ) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

শিহাব খান/এনএ