চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার জোয়ার্দ্দারপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে তিশা রহমান (১৮) নামে এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

তিশা রহমান ওই এলাকার বাবুল আক্তারের মেয়ে। 

পরিবারের দাবি, বিকেলে যেকোনো সময় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তিশা। তবে কি কারণে আত্মহত্যা করেছেন তিশা এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পরিবারের সদস্যরা দিতে পারিনি। এতে পুলিশের সন্দেহ হলে মরদেহটি হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানায় পুলিশ। 

পরিবারের সদস্যরা জানায়, দীর্ঘ দিন ধরে পেটে ব্যথা এবং মাথার সমস্যায় ভুগছিলেন তিশা রহমান। মাঝেমধ্যেই পেটের তীব্র যন্ত্রণায় কাতরাতেন। ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা করার পরও সুস্থ হয়নি। তাই যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে সবার অজান্তে সিলিং ফ্যানে  ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার বিকেলে আমরা ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় তিশাকে দেখতে পেয়ে নিচে নামায়। পরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

স্থানীয়রা জানায়, তিশা রহমান পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। শুক্রবার বিকেলে বাড়ির বাইরে তাকে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। সবার সঙ্গেই হাসিখুশি ও ভালোমতো কথা বলেছেন। হঠাৎ সন্ধ্যার পর শুনছি তিশা আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি আমরা শুনে হতভাগ হয়েছি।

শুক্রবার রাতে চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেন তারা। গ্রহণযোগ্য উত্তর দিতে না পারায় মরদেহটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেনি পুলিশ। শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সৌরভ হোসেন বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিশাকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। তার গলায় একটি লালচে দাগের আলামত পাওয়া গেছে। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। 

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে। মৃত্যুর কারণ হিসেবে প্রাথমিকভাবে পরিবারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। শনিবার ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

আফজালুল হক/এসপি