দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নে ইছামতী নদী পারাপারের জন্য স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি বাঁশের সাঁকোটি এখন ১৩টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষের একমাত্র ভরসা। কিন্তু দুর্ভোগ নিয়ে চলাচলে করতে করতে তারা হাঁপিয়ে উঠেছে। তাই বাঁশের সাঁকোর স্থলে জরুরি ভিত্তিতে একটি সেতু নির্মাণের দাবি দুই উপজেলার মানুষের।

সরেজমিনে দেখা যায়, চিরিরবন্দর উপজেলার ১নং নশরতপুর ইউনিয়নের রানির বন্দর হাট-সংলগ্ন ইছামতী নদীর ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোটি বেহাল হয়ে পড়েছে। বিকল্প উপায় না থাকায় ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, নানা প্রকার উন্নয়ন আটকে আছে তাদের শুধু এই সাঁকোর কারণে। তবু এলাকাবাসীর উদ্যোগে চাঁদা তুলে স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করা সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর, চকগোবিন্দ, আলোকডিহি, ফতেজংপুর, উত্তর পলাশবাড়ী,খানসামা উপজেলার দুবলিয়া, গোয়ালডিহি, লালদিঘী, নীলফামারী জেলার সদর উপলোর বড়য়াসহ ১৩টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করছে।

তারা বলছে, সাঁকোর স্থানে একটি সেতু নির্মাণ করা হলে খুব সহজেই রানীরবন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, আলোকডিহি জেবি উচ্চবিদ্যালয়, রানীরবন্দর এন আই বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, কুমড়িয়া দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয়, রানীরবন্দরহাট ও নশরতপুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এলাকার লোকজন যাতায়াত করতে পারবে।

রানীরবন্দর আলোকডিহি জেবি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলে, সেতু না থাকায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে আসতে হয় আমাদের। বৃষ্টির সময় এ দুর্ভোগ চরমে পৌঁছায়। আমরা এখানে সেতু চাই।

স্থানীয় কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, এই এলাকার মানুষ মূলত কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এখানে ধান ,আলু ,পটোল, শাকসবজিসহ প্রচুর কৃষিপণ্য উৎপাদিত হয়। কিন্তু এখানে সেতু না থাকায় নদীর পূর্ব পাশের কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ফসল সাঁকো দিয়ে হাটে আনতে পারেন না। আর হাটে আনতে গেলে প্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসতে হয়। এতে ভোগান্তি চরমে পৌঁছে এবং উৎপাদন খরচ অনেকটা বেড়ে যায়।

এ ব্যাপারে নশরতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুর ইসলাম শাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেতুর ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ইতিমধ্যে জানানো হয়েছে। শিগগিরই এটি নির্মাণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করছি।

ইমরান আলী সোহাগ/এনএ