উদ্ধার হওয়া আহত গন্ধগোকুল

ভয়ে আতঙ্কে বারবার শব্দ করছিল খয়েরি চোখের লম্বা লেজবিশিষ্ট স্তন্যপায়ী প্রাণী গন্ধগোকুল। মুখে ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন। ফল খেয়ে বেঁচে থাকা প্রাণীটি জনতার রোষানলে পড়ে আহত হয়েছে।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলার শাজাহানপুর উপজেলার সি-ব্লক থেকে এটিকে উদ্ধার করেন বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ফেডারেশনের (বিবিসিএফ) কর্মীরা। এ সময় এটি আহত ছিল।

সরেজমিনে শহরের সেউজগাড়ি বিবিসিএফের কার্যালয়ে দেখা যায়, আহত একটি পূর্ণবয়স্ক গন্ধগোকুল খাঁচায় রাখা হয়েছে। গন্ধগোকুল বর্তমানে অরক্ষিত প্রাণী হিসেবে বিবেচিত। দিন দিন বনজঙ্গল উজাড় হয়ে যাওয়ায় এদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) বিবেচনায়, পৃথিবীর বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় উঠে এসেছে এ প্রাণীটি। আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন প্রজাতির গন্ধগোকুল বাস করে।

একসময় গন্ধগোকুল প্রচুর পাওয়া গেলেও বর্তমানে মানুষের অসচেতনতায় প্রাণীটি তেমন চোখে পড়ে না। এখেই বন্য প্রাণীদের রক্ষায় আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে

এস এম ইকবাল, সভাপতি, বিবিসিএফ

বিবিসিএফ সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১০টায় গুড়া বার্ড ক্লাবের সভাপতি তৌহিদ পারভেজ বিবিসিএফে ফোন দিয়ে জানান একটি গন্ধগোকুল শাজাহানপুর উপজেলার সি-ব্লকে কে বা কারা ধরে রেখেছে। খবর পেয়ে বন্য প্রাণীবিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান ও পরিবেশবাদী সংগঠন টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের সদস্য কামরুজ্জামান দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় প্রাণীটিকে উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে মিজানুর রহমান জানান, গন্ধগোকুলটি পূর্ণবয়স্ক। এটির শরীরে আঘাত রয়েছে। বর্তমানে এর পরিচর্যা চলছে। সুস্থ হলে এটিকে আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। গন্ধগোকুল একটি নিরীহ স্বভাবের প্রাণী। মানুষ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে দিনের পর দিন এই প্রাণীটিকে হত্যা করছে। অথচ প্রাণীটি ফল খেয়ে জীবন ধারণ করে থাকে।

বিবিসিএফের সভাপতি এস এম ইকবাল বলেন, একসময় গন্ধগোকুল প্রচুর পাওয়া গেলেও বর্তমানে মানুষের অসচেতনতায় প্রাণীটি তেমন চোখে পড়ে না। এখেই বন্য প্রাণীদের রক্ষায় আমাদের সবার এগিয়ে আসতে হবে।

এনএ