মাগুরায় চার খুনের ঘটনার তিন দিন পর এক পক্ষ ৬৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা  দায়ের করেছে। সোমবার (১৮ অক্টোবর) নিহত সবুর মোল্লা, কবির মোল্লা ও রহমান মোল্লার ভাই আনোয়ার হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় এ মামলা করেন। 

মাগুরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) কামরুল হাসান জানান, চারজনের মধ্যে সবুর মোল্লা, কবির মোল্লা ও রহমান মোল্লা খুনের ঘটনায় তাদের ভাই আনোয়ার হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে ৬৮ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও ৪০ থেকে ৫০ জনকে  অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। 

অন্যদিকে প্রতিপক্ষের অপর নিহত ইমরান হোসেন হত্যার ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে তার মা ফরিদা বেগম বাদী হয়ে আজই  থানায় মামলা করবেন বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান।

আগামী ১১ নভেম্বর মাগুরা সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে অনুষ্ঠিতব্য ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থিতা নিয়ে সদর উপজেলার জগদল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার (ইউপি সদস্য) নজরুল ইসলাম ও প্রতিপক্ষ সামাজিক দলের প্রার্থী সৈয়দ হাসানের সমর্থকদের মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে সংঘর্ষ হয়। এ সংঘর্ষে বর্তমান মেম্বার নজরুল ইসলামের সমর্থকদের হামলায় প্রতিপক্ষের সবুর মোল্লা, কবির মোল্লা ও রহমান মোল্লা নামে তিন ভাই নিহত হয়। অপর মেম্বার প্রার্থী সৈয়দ হাসান আলীর পক্ষের হামলায় নিহত হন অপর পক্ষের ইমরান হোসেন নামে এক যুবক। এ সংঘর্ষে আহত হন উভয় পক্ষের ২৫ জন।

পরদিন শনিবার সন্ধ্যার পর ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জগদল গ্রামে প্রশাসন পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে। পরে জানাজা শেষে রাতেই তিন ভাই সবুর মোল্লা, কবির মোল্লা ও রহমান মোল্লার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। অন্যদিকে অপর নিহত ইমরান হোসেনকে দাফন কার হয় জগদল রুপাটি গ্রামের কবরস্থানে।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, চার খুনের ঘটনায় গোটা গ্রাম প্রায় পুরুষশূন্য। দূর-দুরান্ত থেকে নারী আত্মীয় স্বজনরা এসে বাড়িঘর পাহারা দিচ্ছে। অধিকাংশ পরিবার লুটপাটের আশংকায় বাড়িঘরের মালামাল, গরু ও ছাগল আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে। তবে পরবর্তী  সহিংসতা এড়াতে গোটা এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আরএআর