বয়স মাত্র পাঁচ বছর। এই বয়সেই একটি শিশু অনর্গল বলতে পারে বিশ্বের ১৯৫টি দেশের নাম। একইসঙ্গে সেসব দেশের রাজধানী ও মুদ্রার নামও বলতে পারে সংকোচহীনভাবে। শুধু এ নিয়েই যে সে সন্তুষ্ট তা কিন্তু নয়। পাশাপাশি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ফল ও সবজির প্রকৃত নাম এমনকি সেগুলোর ইংরেজি নামও বলতে পারে ওই ক্ষুদে শিক্ষার্থী।

প্রতিভাবান শিশুটির নাম দেয়ালিকা চৌধুরী। এ বছর নটরডেম স্কুল অ্যান্ড কলেজের নার্সারি বিভাগে ভর্তি হয়েছে সে। বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করছেন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে। ব্যবসায়ী বাবা দেবাশীষ চৌধুরী ও মা সুম্মিতা দত্ত চিত্রা গৃহিণী।

দেয়ালিকার মা সুম্মিতা দত্ত চিত্রা জানান, দেয়ালিকা ছোট থেকেই অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের। সে যা একবার শুনে তা সহজেই মনে রাখতে পারে। এ বয়সেই তার সবকিছুতেই জানার আগ্রহ প্রবল। পড়াশুনাতেও তার খুব ঝোঁক। নার্সারিতে ভর্তির হওয়ার আগেই সে তার মায়ের আগ্রহে ইতোমধ্যে ১৯৫ দেশের নাম একদম মুখস্থ করে নিয়েছে। ঝটপট বলতে পারে এসব দেশের নাম। একইসঙ্গে বলতে পারে এসব দেশের কঠিন কঠিন রাজধানীর নামও।

তিনি আরও জানান, কিছু সংখ্যক দেশের নাম ও রাজধানীর নাম নিজেরও উচ্চারণ করতে কষ্ট হয়। অথচ তার কন্যা শিশুটিকে একবার বলে দিলে দ্বিতীয়বার আর বলতে হয় না। দেশের রাজধানীগুলোর নাম শেখার পর দেখলেন যে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার নাম মনে রাখতে পারে। পরে ১৯৫টি দেশের মুদ্রার নাম মুখস্ত করে নিয়েছে দেয়ালিকা।

শিশু বয়সে তার এমন অস্বাভাবিক প্রতিভায় মা-বাবা দুজনই উচ্ছ্বসিত। তার এ শিশু কন্যার কথা শুনতে প্রতিদিন আত্মীয়স্বজন ছাড়াও পাড়া প্রতিবেশীরা ভিড় করছেন বাড়িতে। মেয়েকে অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দেয়ালিকার বাবা-মা।

দেয়ালিকার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট এই শিশুটি কয়েকটি পুতুল নিয়ে খেলছে। তার সঙ্গেই রয়েছে বই-খাতা। তার হাতের লেখাও চমৎকার। তাকে কয়েকটি দেশের নাম বলার সঙ্গে সঙ্গেই সে বলে দিচ্ছিল ওই দেশের রাজধানীর নাম। বলতে পারছে মুদ্রার নামও। এই বয়সের একটি শিশুর এমন প্রতিভা অবাক করবে যে কাউকেই।

শ্রীমঙ্গল দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজের প্রভাষক অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত বলেন, শিশুদের সবচেয়ে বড় পাঠশালা হচ্ছে তার পরিবার। শিশুদের ওপর পড়াশোনা চাপিয়ে দিয়ে কিছু করা যায় না। দেয়ালিকার মা যা করছেন, শিশুদের ছোটবেলা থেকে এভাবেই খেলাচ্ছলে সবকিছুর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে হয়।

ওমর ফারুক নাঈম/এমএসআর