আজ  (২৫ অক্টোবর) রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে সরকার ঘোষিত মা ইলিশ রক্ষা অভিযান। বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও অভিযানকে সফল বলছে মৎস্য অধিদফতর। অভিযানের ফলে অভয়ারণ্যগুলোতে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পেরেছে। এতে দেশে অধিক পরিমাণে ইলিশ উৎপাদন হবে। বাড়বে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি।

মৎস্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগের উপ-পরিচালক আনিছুর রহমান তালুকদার বলেন, সফলভাবে এবারের মা ইলিশ রক্ষা অভিযান শেষ হচ্ছে সোমবার রাত ১২টায়। আশা করা হচ্ছে এরপর জেলেরা নদীতে গেলে আশানুরূপ ইলিশ পাবেন।

তিনি বলেন, অবরোধকালে কেউ মাছ আহরণে নদীতে নামলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কাউকে এ বিষয়ে ছাড় দেওয়া হয়নি, সে যতই ক্ষমতাবান হোক না কেন।  

বিভাগীয় মৎস্য অধিদফতর জানিয়েছে, ইলিশের প্রজনন মৌসুম অর্থাৎ ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে ৮৭১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত আড়াই হাজার অভিযান চালায়। এতে ৬৩৮ জনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অভিযানে প্রায় ৫৫ লাখ ৯৫৬ মিটার জাল জব্দ করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ১১ লাখ ৯৬ হাজার ১৬০ টাকা। এছাড়াও ৮ মেট্রিক টন ইলিশ উদ্ধার করা হয়।
 
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ। এ নির্দেশনা অমান্য করায় নেওয়া হয়েছে আইনি ব্যবস্থা। নিষেধাজ্ঞার এ সময়কে ঘিরে বিভাগের ৬ জেলার জেলে পরিবারের জন্য ৬ হাজার ৯৪২ দশমিক ৪৮ মেট্রিক টন ভিজিএফের চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

অভিযানে উপকূলীয় এলাকার তুলনায় বরিশাল নদী অঞ্চলে এবার বেশি জেলের কারাদণ্ড হয়েছে। বরিশাল বিভাগে ৫০৪টি অবতরণ কেন্দ্র, ৩ হাজার ৭১৮টি মাছঘাট, ৭ হাজার ১টি আড়ত, ৫ হাজার ৯২৮টি বাজার পরিদর্শন করা হয়। মামলা হয়েছে ৭৫০টি। জরিমানা করা হয়েছে ১৯ দশমিক ১০৩ লাখ টাকা। জব্দকৃত মালামাল নিলাম করে আয় হয়েছে ১ দশমিক ৮৩৭ লাখ টাকা।

গত বছর ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত  পরিচালনা করেছে ১ হাজার ২৬টি, অভিযান পরিচালনা করেছে ২ হাজার ৫০৫টি, আইন না মানায় মামলা করা হয়েছে ১ হাজার ২৪৯টি, কারাগারে পাঠানো হয়েছে ১ হাজার ১৩৩ জনকে এবং জরিমানা করা হয়েছে ২০ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

প্রসঙ্গত, মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চলাকালে হিজলা, ঝালকাঠিসহ কয়েকটি স্থানে জেলেদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাছাড়া অভিযানে গিয়ে অস্ত্র হারিয়েছেন আনসার সদস্য, প্রাণ হারিয়েছেন এক কোস্টগার্ড সদস্য। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর