ভ্যানের হ্যান্ডেল ধরেছেন ভ্যানচালক, পেছনে ভ্যানের ওপর থাকা খড়িগুলো ধরেছেন স্থানীয় একজন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একে অপরকে সাহায্য করেই পার হতে হচ্ছে এই মরণফাঁদ কালভার্টটি। দীর্ঘদিন আগেই কালভার্টের মাঝের অংশ ভেঙে ধসে পড়ে। বেরিয়ে আসে কালভার্টের রডগুলোও। কোনো উপায় না পেয়ে এভাবে একে অপরের সাহায্য নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে স্থানীয়দের।

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার বাঁচোর ইউনিয়নের রানীশংকৈল-নেকমরদ মহাসড়ক ঘেঁষা মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহারহাট রাস্তায় গেলে চোখে পড়ে এমন একটি কালভার্ট।

দীর্ঘদিন ধরেই ভেঙে পড়ে রয়েছে কালভার্টটি। এখনো সংস্কার করা হয়নি সেটি। যানবাহন ও এলাকাবাসীর জন্য এটি যেন মরণফাঁদ। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। হতে পারে প্রাণহানিও। এলাকাবাসীর দাবি, যেন দ্রুত সংস্কার করা হয় এই কালভার্টটি।

সরেজমিনে দেখা যায়, কালভার্টের মাঝের একটি বড় অংশ ভেঙে পড়ে রয়েছে। বেরিয়ে পড়েছে কালভার্টের রডগুলোও। ঝুঁকি নিয়ে একে অপরকে সাহয্য করেই চলাচল করছে স্থানীয়রা। এই কালভার্টের ওপর দিয়ে শিক্ষার্থীদের আশপাশের স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয়।

সেইসঙ্গে হাটবাজারে কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া করতে হয় স্থানীদের। কোন উপায় না পেয়ে যাতায়াতের একমাত্র রাস্তার ভাঙা কালভার্টের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটার আগেই কালভার্টটি সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয়রা।

জানা যায়, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতাধীনে বছর পাঁচেক আগে কয়েকধাপে মীরডাঙ্গী থেকে কাতিহারহাট পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন করে নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর থেকেই বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় ব্যস্ততম সড়কে পরিণত হয়ে পড়ে।

তবে নতুন সড়ক নির্মাণের সময়েও বহু পুরোনো এই কালভার্টটি বেহাল থাকলেও নতুন করে নির্মাণ না করায় এটি নিয়ে দুর্ভোগে রয়েছেন স্থানীয়রা। শুধু এই জরাজীর্ণ সেতুটির কারণেই অচল হয়ে পড়েছে এ সড়কটিও। কালভার্টির কারণে সড়কটিতে চলাচল করতে পারছে না ভারী কোনো যানবাহনও।

স্থানীয় বাসিন্দা ওমর ফারুক বলেন, এই কালভার্টের ওপর দিয়ে প্রতিদিন বাস-ট্রাকসহ অসংখ্য যানবাহন যাতায়াত করে। দীর্ঘদিন আগে এই কালভার্টটির মাঝের অংশ ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। অচিরেই কালভার্টটি মেরামত না করলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে প্রাণহানি হতে পারে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহরিয়ার আজম মুন্না বলেন, কালভার্টটি দীর্ঘদিন ধরেই খুব ভয়ানক অবস্থায় রয়েছে। স্থানীয়রা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সেটা নতুন করে নির্মাণের জন্য বলব।

রানীশংকৈল উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম বলেন, সড়কের মধ্যে থাকা পুরোনো কালভার্টি এরই মধ্যে দুবার সংস্কার করা হয়েছে। তাছাড়াও নতুন করে নির্মাণ করার জন্য একাধিকবার বিভিন্ন প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন পেয়ে অর্থ বরাদ্দসহ টেন্ডার হলেই সেতুটি ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।

নাহিদ রেজা/এমএসআর