যশোরের কেশবপুরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে কবির পৈতৃক বাড়ি

আজ ২৫ জানুয়ারি, সোমবার। বাংলা সাহিত্যের প্রবাদপুরুষ, অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক, সনেটের রচয়িতা মধুকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী। 

জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে যশোর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাগরদাঁড়ির মধুমঞ্চে কবির জীবনীর ওপর আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান শুরুর আগে মধুকবির আবক্ষে পুষ্পমাল্য অপর্ণ করা হবে। তবে করোনার কারণে এবার হচ্ছে না সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা।

১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরে সাগরদাঁড়ি গ্রামের বিখ্যাত দত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। তার বাবা জমিদার রাজনারায়ণ দত্ত এবং মা জাহ্নবী দেবী। 

মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যে উপহার দেন শর্মিষ্ঠা, পদ্মাবতী, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, কৃষ্ণকুমারী, মেঘনাদবধ কাব্য, ব্রজঙ্গনা কাব্য, বীরঙ্গনা কাব্য, চতুর্দশপদী কবিতাবলী, হেক্টরবধের মতো বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম।

১৮৫৯ সালে তিনি রচনা করেন ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক। এটিই প্রকৃত অর্থে বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম মৌলিক নাটক। ১৮৬০ সালে রচনা করেন দুটি প্রহসন ‘একেই কি বলে সভ্যতা’ এবং ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ এবং পূর্ণাঙ্গ পদ্মাবতী নাটক। পদ্মাবতী নাটকেই তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন। একের পর এক রচনা করেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ (১৮৬১) নামে মহাকাব্য, ‘ব্রজাঙ্গনা’ কাব্য (১৮৬১), ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক (১৮৬১), ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্য (১৮৬২), চতুর্দশপদী কবিতা (১৮৬৬)। 

মধুসূদনের শেষ জীবন চরম দুঃখ ও দারিদ্র্যের মধ্যদিয়ে কাটে। আইন ব্যবসায় তিনি তেমন সাফল্য লাভ করতে পারেননি। তাছাড়া অমিতব্যয়ী স্বভাবের জন্য তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন আলিপুর জেনারেল হাসপাতালে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত মৃত্যুবরণ করেন।

মধুকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে সোমবার বিকেল তিনটায় উদ্বোধন, আলোচনা সভা ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আয়োজন শেষ হবে। করোনাভাইরাসের কারণে এবার সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার আয়োজন হচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শুধু জন্মবার্ষিকী পালনের সকল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

এসপি