খুলনার রূপসা উপজেলার রামনগর এলাকার আ‌লো‌চিত রাজ খা হত্যা মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে অপর এক ধারায় তাকে ৭ বছ‌রের কারাদণ্ড দেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদাল‌তের বিচার ম‌শিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা ক‌রেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসা‌মি হলেন র‌হিমনগর এলাকার মান্নান ওর‌ফে মুরাদ ম‌ল্লিকের ছে‌লে জাম‌সেদ ওর‌ফে জা‌বেদ ম‌ল্লিক।

এ মামলার অপর আসা‌মি মিজা‌নের বিরু‌দ্ধে অ‌ভি‌যোগ প্রমাণ না হওয়ায় তা‌কে খালাস দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। রায় ঘোষণার সময় আসা‌মিরা আদাল‌তে উপ‌স্থিত ছি‌লেন। রাষ্ট্রপ‌ক্ষের আইনজীবী এনামুল হক রা‌য়ের বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন।

আদাল‌তের সূত্র জানায়, ২০১৭ সা‌লের ১ জুন সকা‌লে এসআই আব্দুল খা‌লেক নন্দনপুর এলাকায় দা‌য়িত্ব পাল‌নের সময় জান‌তে পা‌রেন রামনগর এলাকায় বস্তাবন্দি লাশ প‌ড়ে আ‌ছে। সেখা‌নে গি‌য়ে দে‌খেন লাশ‌টি মস্তকবিহীন। সুরতহাল রি‌পোর্ট তৈ‌রি ক‌রে খুলনা মে‌ডি‌কেল ক‌লেজ হাসপাতা‌লে প্রেরণ ক‌রেন তি‌নি। এ ঘটননায় অজ্ঞাতনামা আসা‌মি‌দের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দা‌য়ের ক‌রেন তি‌নি।

এর আ‌গে নিহ‌তের বাবা আমীর আলী খা ছে‌লে নি‌খোঁজ হওয়ার ব্যাপারে রূপসা থানায় জি‌ডি ক‌রেন। অজ্ঞাতনামা একজনের লাশ পাওয়া গে‌ছে ব‌লে পু‌লিশ মারফত তি‌নি জান‌তে পারেন। এ খবর জে‌নে তি‌নি থানায় যোগা‌যোগ ক‌রে তার ছে‌লের পোশাক দেখ‌তে পে‌য়ে চিন‌তে পা‌রেন। হত্যা মামলা‌টি ক্লুলেস ছিল। নিহ‌তের মোবাইল ফো‌নের সূত্র ধ‌রে এ মামলার আসা‌মি‌দের গ্রেফতার করা হয়।

রা‌জের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং ক‌রে প্রথ‌মে কামরুল সরদার‌কে আটক ক‌রা হয়। মোবাইল ফোন প্রা‌প্তির কথা জান‌তে চাই‌লে ভ্যানচালক আ‌জি‌জের নিকট থে‌কে সা‌ড়ে ৩০০ টাকায় ক্রয় ক‌রে‌ছেন ব‌লে জানান। আ‌জিজের মাধ্যমে জাম‌সেদ‌কে গ্রেফতার করা হ‌লে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেয় সে।

তদন্ত রি‌পো‌র্টে বলা হয়, রাজ হত্যা মামলার আসা‌মিরা ও ভিক‌টিম একই এলাকার বা‌সিন্দা। খালাস পাওয়া আসা‌মির তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে রাজ খা অ‌নৈ‌তিক সম্পর্কে জ‌ড়ি‌য়ে প‌ড়েন। বিষয়‌টি তিনি জান‌তে পে‌রে ভিক‌টিম‌কে হত্যার প‌রিকল্পনা তার মাথায় আ‌সে।

৩০ মে রা‌তে জাম‌সে‌দের মাধ্যমে রাজ‌কে ডে‌কে নিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার কিছু‌দিন আ‌গে তুচ্ছ ঘটনা‌য় রা‌জের সঙ্গে জাম‌সে‌দের বি‌রোধ হয়। আর এ বি‌রো‌ধের কার‌ণে মিজা‌নের প‌রিকল্পনায় অংশগ্রহণ ক‌রে ব‌লে ১৬৪ ধারায় আদালত‌কে জ‌ানি‌য়ে‌ছেন তিনি।

মোহাম্মদ মিলন/এমএসআর