খোরশেদ আলম

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নির্বাচনের প্রচারণার সংবাদ সংগ্রহের সময় আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলায় যুগান্তরের কাপাসিয়া প্রতিনিধি খোরশেদ আলম (৪০) গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

শনিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত খোরশেদ আলম কালীগঞ্জ উপজেলার আজমতপুর গ্রামের মাওলানা মোয়াজ্জেম আলী খানের ছেলে। তিনি যুগান্তরসহ আনন্দ টেলিভিশনের কাপাসিয়া প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত আছেন।

সাংবাদিক খোরশেদ আলম জানান, শনিবার বিকেলে চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী মিজানুর রহমান খান নলগাঁও এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাপাসিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোবাইয়া ইয়াসমিন তমা নির্বাচন আরচণবিধি ভঙ্গের দায়ে মিজানুর রহমান খানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পরে তার কর্মী-সমর্থকরা ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ঘিরে ফেলে আন্দোলন করতে থাকে।

খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে, ঘটনার দৃশ্য ধারণ করতে থাকেন। এ সময় মিজানুর রহমানের নির্দেশে তার কর্মী-সমর্থকরা সাংবাদিক খোরশেদের ওপর হামলা করে। এ সময় তাকে কিলঘুষি ও লাথি মেরে একটি ভিডিও ক্যামেরা, দুটি স্মার্ট মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাপাসিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রোবাইয়া ইয়াসমিন তমা জানান, শনিবার বিকেলে নলগাঁও গ্রামে নির্বাচন আচরণবিধি ভেঙ্গে প্রচারণা চালাচ্ছিলেন চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান খান। এ সময় তার ছেলের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল মহড়া চলাকালীন তা বন্ধ করে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরা পরিস্থিত উত্তপ্ত করে। ঘটনার ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়।

হামলার বিষয়ে জানতে চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো কর্মী-সমর্থকরা জড়িত নেই, হয়তো অন্যকেউ নির্বাচনকে প্রভাবিত করে এ হামলার ঘটনা ঘটিয়ে আমার নাম ব্যবহার করছে।

কাপাসিয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম নাছিম বলেন, মোবাইল কোর্ট করা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হওয়ায় আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে এসে জানতে পারি একজন সাংবাদিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শিহাব খান/এমএসআর