দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হচ্ছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার সাত ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে পুরোদমে মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। তবে উপজেলার সদর ইউনিয়নে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে একই ওয়ার্ডে ভোটযুদ্ধে নেমেছেন মা জীবন নাহার ও মেয়ে বুলবুলি আক্তার। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন মা ও মেয়ে। 

মা-মেয়ে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ৩ নং সদর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড থেকে নির্বাচন করছেন। তবে মায়ের অভিযোগ, মেয়ে বুলবুলি আক্তার বিষয়টি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা না করে মায়ের বিরুদ্ধে ভোটযুদ্ধে নেমেছে। 

রোববার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নে ওই দুই প্রার্থীকে তাদের নির্বাচনী এলাকায় ভোট চাইতে দেখা যায়। 

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, আগামী ১১ নভেম্বর ব্যালট পেপারের মাধ্যমে তেঁতুলিয়া উপজেলার সাত ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তবে ৩ নং তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডে পাঁচজন সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে উপজেলা শহরের শতদল আদর্শ গ্রাম থেকে হেলিকপ্টার প্রতীক নিয়ে জীবন নাহার ও বক প্রতীক নিয়ে বুলবুলি আক্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। 

তেঁতুলিয়ার আর্দশ গ্রামের বাসিন্দা লাবলু হোসেন জানান, জীবন নাহার টানা দুইবার নারী সদস্য পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ভোটারদের কাছে অনেক জনপ্রিয়। তবে এবার তার ওর্য়াডে মেয়ে বুলবুলিকে ভোট করতে দেখতেছি। এমন চিত্র দেখে ভোটাদের মধ্যে একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আমরা কাকে ভোট দেবো? এটা নিয়ে ভোটাররা দোটানায় আছে।

একই কথা বলেন দর্জিপাড়া এলাকার বাসিন্দা আলা উদ্দিন। তিনি বলেন, তারা মা-মেয়ে ভোট করছে। যেকোনো একজনকে ভোট দিতে হবে। আমরা কাকে ভোট দেবো আর কাকে ছাড়বো। তারা যদি বিষয়টি এখনই সমঝোতা না করে তাহলে মা-মেয়ের লড়াইয়ে তৃতীয় পক্ষ জয়ী হয়ে যাবে। 

মা জীবন নাহার বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে আমার সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নারী সদস্য নির্বাচিত হয়ে মানুষের সেবা করে যাচ্ছি। এবারও অন্য প্রার্থীদের চেয়ে আমার অবস্থান অনেক ভালো। তাদের চেয়ে জনপ্রিয়তায় আমি এগিয়ে আছি। দুইবার নির্বাচিত হওয়ায় অনেক ভালো কাজ করেছি। যোগ্য হওয়ায় ভোটাররা আমার সাথে আছে।

তবে আমার মেয়ে বুলবুলি আক্তার কারো সাথে বিষয়টি শেয়ার না করে তার স্বামীর কথায় আমার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ভোট করছে। আমার মেয়ের যদি ভোট করার ইচ্ছে ছিল তাহলে আমাকে বলতে  পারতো। আমি আমার জায়গা ছেড়ে দিতাম।

তবে বুলবুলি আক্তার জানান, তার মা জীবন নাহার ও স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করেই তিনি ভোটের মাঠে নেমেছেন। তিনি আরও বলেন, কার কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা আছে তা ভোটের দিনই দেখা যাবে। 

তবে মা-মেয়ের ভোটযুদ্ধে নামার কারণে ভোটারাধিকার প্রয়োগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নিকটতম আত্মীয়-স্বজন ও ভোটাররা। এ নিয়ে তাদের সকলের মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে মা-মেয়ের এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতা এবারই প্রথম। 

রনি মিয়াজী/এসপি