বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় অংশ নিতে ঢাকায় গিয়েছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র জিহাদ। ছিল বুকভরা স্বপ্ন। আশায় বুক বেধেছিলেন পরিবারের সদস্যরাও। তবে সেই আশা নিমিষেই মিশে গেছে সড়কে। স্বপ্ন পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে। শুধু জিহাদই নয়, একইসঙ্গে ঝরেছে তার বড় ভাইয়েরও প্রাণ। 

বাবার অসুস্থতার খবরে বড় ভাই ফিরোজের সঙ্গে গাজীপুর থেকে মোটরসাইকেলযোগে জামালপুর সদরের খড়খরিয়ায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন জিহাদ। তবে পথেই ঘটে দুর্ঘটনা। মঙ্গলবার (০২ নভেম্বর) সকালে ময়মনসিংহের ত্রিশালের কাজীর শিমলা এলাকায় আসতেই একটি কাভার্ড ভ্যান মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে ছিটকে পড়েন তারা। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান দুই ভাই। 

রাত ৮টা। জিহাদ আর ফিরোজ বাবার কাছে ফিরলেন ঠিকই। তবে জীবিত নয়, ফিরেছে তাদের নিথর দেহ। কথা ছিল বাড়ি এসে অসুস্থ বাবাকে চিকিৎসা করানোর জন্য ঢাকায় নেবেন দুই ভাই। কিন্তু তারাই এখন পরপারে। 

আদর-স্নেহে বড় করা দুই সন্তানের লাশ একই অ্যাম্বুলেন্সে দেখবেন তা কল্পনাও করেননি বয়স্ক বাবা আজিজুল হক। তাই তো সন্তানদের মুখখানা শেষবারের মতো দেখার যেন সাহসটুকুও ছিল না বাবার। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠে পরিবেশ। স্বজনরা বলেন, সড়কে আর মৃত্যুর মিছিল আমরা দেখতে চাই না। এভাবে আর যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয়। 

জামালপুর সদর উপজেলার খড়খরিয়া গ্রামের আজিজুল হকের পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে তৌহিদুল ইসলাম জিহাদ সবার ছোট। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন বিভাগের মার্স্টাসের ছাত্র ছিলেন। আর বড় ভাই ফিরোজ মোর্শেদ গাজীপুরে ডিবিএল সিরামিক্সে চাকরি করতেন। 

উবায়দুল হক/এসপি