মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাটে যানবাহনসহ ডুবে যাওয়া রো রো ফেরি আমানত শাহ ৯ দিনেও উদ্ধার হয়নি। ফেরিটি উদ্ধারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেনুইন এন্টারপ্রাইজের উদ্ধারকারী জাহাজ উইন্স বার্জ বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে ঘাটে পৌঁছানোর কথা থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্তও সেটি আসেনি। 

জানা গেছে, ১৪টি যানবাহন ও ৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে গত ২৭ অক্টোবর ডুবে যায় রো রো ফেরি আমানত শাহ। এরপরেই ডুবে যাওয়া ফেরি ও যানবাহন উদ্ধারে অভিযানে নামে উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা। উদ্ধার অভিযানে হামজার সঙ্গে যুক্ত হয় আরেক উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তম। চার দিনের উদ্ধার অভিযানে সব যানবাহন উদ্ধার করা হয়। এরপর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ যানবাহন উদ্ধার কার্যক্রম সমাপ্ত ঘোষণা করে। 

উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা ও রুস্তম পুরোনো হওয়ায় উদ্ধার সক্ষমতাও কমে গেছে। এ দুটির উদ্ধার সক্ষমতা মাত্র ১০০ থেকে ১২০ টন আর ডুবে যাওয়া ফেরি আমানত শাহের বডির ওজনই ৪৮০ টন। ফেরি আমানত শাহ উদ্ধারে সক্ষম কোনো উদ্ধারকারী জাহাজ বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে না থাকায় দুই কোটি টাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেনুইন এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে চুক্তি করে কর্তৃপক্ষ।

চুক্তির পর জেনুইন কর্তৃপক্ষের কয়েকজন ডুবুরি দল এসে ফেরির নিচে ড্রেজিংসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনা করলেও এখনো ঘটনাস্থলে আসেনি বিশেষ উদ্ধারকারী জাহাজ উইন্স বার্জ। এতে ঝিমিয়ে পড়েছে ফেরি উদ্ধারের কার্যক্রম। কবে নাগাদ ফেরি উদ্ধার অভিযান সম্পন্ন হবে সে বিষয়েও অবগত নয় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

এদিকে ফেরি উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত না হওয়ায় বন্ধ রয়েছে ফেরিঘাটের ৫ নম্বর পন্টুন। দীর্ঘ সময় ঘাট বন্ধ থাকায় ভোগান্তি বাড়ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের উভয় ফেরিঘাট এলাকায় আগত যাত্রী ও যানবাহন শ্রমিকদের। এতে করে ৩০ মিনিটের নৌপথ পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে দিনের পর দিন। সহসাই এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়ার বিকল্প কোনো উপায় নেই বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি। 

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, পাটুরিয়ায় ডুবে যাওয়া ফেরিটি উদ্ধারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেনুইন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন। আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ফেরিটি উদ্ধার হতে পারে। 

জেনুইন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. বদিউল আলম বলেন, উদ্ধারকারী বিশেষ জাহাজ উইন্স বার্জ ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে প্রাথমিক কিছু প্রস্তুতি শেষে মূল উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হবে। 

পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় অপেক্ষমাণ যানবাহনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ফেরি আমানত শাহ ডুবে যাওয়ার পর থেকে ৫ নম্বর ঘাটের পন্টুন দিয়ে যানবাহন লোড-আনলোড কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যে কারণে ঘাট এলাকায় ভোগান্তি বাড়ছে। সর্বশেষ পাটুরিয়া ফেরিঘাট এলাকায় সাত শতাধিক যানবাহন নদী পার হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানান তিনি।

সোহেল হোসেন/আরএআর/জেএস