এক দিন কাজ না করলে সংসার চলে না
অসুস্থ মাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য বগুড়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন রাকিব। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখেন কোনো গাড়ি নেই। তিনি বলেন, আমার মা অসুস্থ। বগুড়ায় ডাক্তারের সিরিয়াল দেওয়া আছে। বাসস্ট্যান্ডে এসে দেখি কোনো বাস চলছে না। এখন যে কী করি? খুবই চিন্তায় আছি।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে সারা দেশের মতো গাইবান্ধাতেও পরিবহন ধর্মঘট চলছে। সকাল থেকে কোনো যাত্রীবাহী বাস গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যায়নি।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে গাইবান্ধা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে দেখা গেছে, ঢাকাসহ বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েছেন চাকরিজীবী, পরীক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ। বাস না পেয়ে অনেকে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন আবার অনেকে ট্রেন অথবা বিকল্প উপায়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বাস টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা আমিনুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, বাড়ি থেকে সকাল ৬টায় বের হয়ে টার্মিনালে এসে শুনি কোনো যাত্রীবাহী বাস চলবে না। আমার বগুড়া যাওয়া খুবই দরকার ছিল। এখন যেতে পারছি না। অনেকের রংপুরে চাকরির পরীক্ষা ছিল। আজ তারাও যেতে পারল না। এভাবে সাধারণ মানুষদের নিয়ে নাটক করার কোনো মানেই হয় না।
বিজ্ঞাপন
রিয়াজ উদ্দিন নামে এক শ্রমিক বলেন, আমি গরিব মানুষ। এক দিন কাজ না করলে সংসার চলে না। বাড়ি থেকে বের হয়ে এসেছি বগুড়া যাব বলে। এখানে এসে শুনি তেলের দাম বাড়ানোর কারণে সব গাড়ি বন্ধ রয়েছে। এখন কী করব ভাই? আমাদের সংসার আছে।
মিজান নামে এক চাকরিজীবী বলেন, গতকাল বাসের টিকিট কাটছি। আজ বাসস্ট্যান্ডে এসে শুনি বাস বন্ধ। আমার ঢাকায় না গেলে চাকরির সমস্যা হয়ে যাবে।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আব্দুর রশিদ সরদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, হঠাৎ করে সরকার কোনো আলোচনা ছাড়াই ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা করে বাড়িয়েছে। আমরা এমনিতেই কষ্টের মধ্যে আছি, কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না, কোনো মালিক ঠিকমতো টাকা পাচ্ছে না। এছাড়া ট্যাক্স, টোকেন, ফিসনেসসহ চাকার দামও বেড়ে গেছে। বলতে গেলে পরিবহন ব্যবসায় ধস নেমেছে। আমাদের প্রতি সরকারের কোনো নজর নেই। ভাড়া না বাড়ানোয় ও সঠিক সুরাহা না হওয়ায় আমরা সব গাড়ি বন্ধ রেখেছি।
রিপন আকন্দ/এসপি