ভুক্তভোগী চা দোকানি হাসানুজ্জামান উজ্জ্বল

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় হাসানুজ্জামান উজ্জ্বল নামে এক চা দোকানিকে চড় ও ঘুষি মারার অভিযোগ উঠেছে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিনের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে পৌর এলাকার বাগানপাড়ার শ্যাকড়াতলার মোড়ে চায়ের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। 

তবে ওসি মোহাম্মদ মহসিনের দাবি- ওই দোকানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকেই টাকা দিয়ে (জুয়া) ক্যারাম বোর্ড খেলা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই ওই দোকানে গিয়ে ক্যারাম বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই দোকানিকে কোনো মারধর করা হয়নি। 

ভুক্তভোগী চা দোকানি হাসানুজ্জামান উজ্জ্বল ওই এলাকার মৃত হাসমত আলীর ছেলে।  

হাসানুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমি চায়ের দোকান চালাই। মঙ্গলবার আনুমানিক দুপুর ১টা-দেড়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন আমার দোকানে এসে বলে এখানে কী? আমার দোকানে কয়েকজন লোকজন ছিল তাদের সবার চেক করে বলে এখানে ক্যারাম বোর্ড চালায় কে? উত্তরে বলি আমি স্যার। এরপর আর কিছু জিজ্ঞাসা না করেই আমার ক্যারাম বোর্ড দুটি ভেঙে দেন ওসি স্যার। ভাঙার পর আমি বলেছি গরিবের পেটে লাথি মারলেন স্যার? এই কথা বলতেই ওসি স্যার বলল- গরিব হতে বলছে কিডা। এই বলেই আমার চোখে দুইটা ঘুষি মারেন। 

উজ্জ্বলের দাবি, ওই সময় তার দোকানে কেউ ক্যারাম বোর্ড খেলছিল না। তার দোকানে টাকার বিনিয়নে কেউ ক্যারাম বোর্ড খেলে না। 

উজ্জ্বলের মা সাহেদা খাতুন বলেন, ‘আমি ওই সময় এক জাইগা থেকে দোকানে ফিরছিলাম। এসে দেখি ওসি মোহাম্মদ মহসিন আমার ছেলের দোকানের ক্যারাম বোর্ড দমদম করে ভাঙচুর করছে। এরপর আমার ছেলে ওই সময় ওসির উদ্দেশে বলল গরিবের পেটে লাথি মারলেন? এরপর ওসি আমার ছেলের এক চাটি ও চোখে ঘুষি মেরে চলে গেল।’ 

কী কারণে এ ঘটনা ঘটলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি কিছুই জানি না। আনদাজে এসেই ক্যারাম বোর্ডটা ভেঙে ফেলল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলে গরিব মানুষ। চা বেচে খায়। এই ক্যারাম বোর্ডটি সমিতির টাকা তুলে কিনেছে। এসে হুট করে ক্যারাম বোর্ডটা ভেঙে দিয়ে চলি গেল। আর আমার ছেলের মেরে থুয়ে গেল।’

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাফিজুর রহমান মাফি বলেন, আমি একটা প্রোগামে জীবননগর উপজেলায় এসেছি। বিষয়টি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জেনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে কথাবার্তা না বলে এখনি আমি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ওই দোকানে প্রতিদিন ১০ টাকা করে (জুয়া) ক্যারাম বোর্ড খেলা হয় বলে অভিযোগ ছিল। তাই আমি ওই দোকানের ক্যারাম বোর্ড ভেঙে দিয়েছি। তবে ওই দোকানিকে আমি মারধর করেনি। 

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. আবু তারেক ঢাকা পোস্টকে বলেন, ক্যারাম বোর্ডটি না ভেঙে সেখান থেকে চলে আসা উচিত ছিল। আমি উনার (ওসি) সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।      

আফজালুল হক/আরএআর