১১০ বছরের বৃদ্ধ মাকে নিয়ে ভোটকেন্দ্রে আবুল হোসেন

আনন্দঘন পরিবেশে ঢাকার ধামরাইয়ে শুরু হয়েছে ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ। দলে দলে ভোট প্রদানের জন্য কেন্দ্রে যাচ্ছেন ভোটাররা। এদের মধ্যে মা ও স্ত্রী নিয়ে প্রায় ২২ বছর পরে ভোট দিতে এসেছেন আবুল হোসেন। এতদিন পরে ভোট দিতে পেরে আনন্দে আপ্লুত আবুল।

ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের দেপাশাই গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন পার করে সুযোগ হয়েছে নিজের অধিকার ভোট প্রদানের। রাত পোহানোর অপেক্ষায় ছিলেন আবুল। তাই তো তিনি সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভোট প্রদানের জন্য এসেছেন কেন্দ্রে।

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে ধামরাইয়ের সোমভাগ ইউনিয়নের কাউন্সিল বাজারের দেপাশাই ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদানের জন্য পরিবার নিয়ে আসেন আবুল। এরআগে ভোর ৪টার দিকে উপজেলার হার্ডিঞ্জ স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হয় ব্যালট বাক্স, ব্যালট পেপারসহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। এছাড়া নেওয়া হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা।

আবুল হোসেন ১১০ বছরের বৃদ্ধ মাকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে এসেছেন তার ভোটাধিকার প্রদানের জন্য। ভোট প্রদান শেষে আবুল হোসেনের সঙ্গে কথা ঢাকা পোস্টের।

তিনি বলেন, আমি সৌদি আরবে ২৫ বছর ধরে থাকি। এতদিন ভোট দিতে পারিনি। ভোট দিতে না পারায় অনেক খারাপ লাগতো। মনে হচ্ছিল আমি আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। ভোট প্রদানসহ কয়েকটি কারণ নিয়ে এবার দেশে এসেছি। ভোট আমি আমার পছন্দের প্রার্থীকে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে প্রদান করলাম।

তিনি আরও জানান, অনেক আনন্দ লাগছে, অনেক ভালো লাগছে। আমি যাকে ভোট প্রদান করেছি তিনি নির্বাচিত হলে আমার দেশে আসা স্বার্থক হবে। তাই ১১০ বছর বয়সী মাকেও নিয়ে এসেছি ভোট প্রদানের জন্য। মা রাত থেকে বলছেন, ‘বাবা কাল আমাতেও ভোট দিতে নিয়ে যাবি।’

আবুলের মা আমিনাতুন্নেছা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমিও অনেকদিন ধরে ভোট দিতে পারি না। এবার আমার ছেলে এসেছে বলে ভোট দিতে পারলাম। আমার ছেলের সঙ্গে ভোট দিতে এসেছি। বয়স হয়েছে, কষ্ট হলেও ভোট দিতে ভালো লাগে। আগে তো নির্বাচনের সময় ঈদের মতো আনন্দ করতাম। এখন আনন্দ কম হলেও ভোটের আমেজ সবার মধ্যে রয়েছে।’

দেপাশাই ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই কেন্দ্রে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটাররা ভোট প্রদান করছেন। আমি শুনেছিলাম সোমভাগ ইউনিয়ন ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নেই। নিরাপত্তার জন্য এখানে ১৭ জন আনসার ভিডিপি ও ৫ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, ধামরাই উপজেলার ১৫ ইউনিয়নের ১৫৫ কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ চলছে। এসব ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪২ জন প্রার্থী। ইউপি সদস্য হিসাবে নির্বাচন করছেন ৬৮৮ জন।

১৫ ইউনিয়নের মধ্যে সূয়াপুর, ও রোয়াইল ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী নৌকা মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচন থেকে মৌখিকভাবে সরে দাঁড়ান। এসব ইউনিয়নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯২১ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭০ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৫ জন।

এমএসআর