ভয়-ভীতির শঙ্কা উপেক্ষা করে পাবনার সুজানগরের ১০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়। একটানা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে।

ভোট শুরুর আগেই কেন্দ্রে দলে দলে ছুটে গেছেন অনেক ভোটার। কেন্দ্রের গেট খোলার আগেই ভোটাধিকার প্রয়োগে হাজির হন তারা। এছাড়াও লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। কেউ কেউ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরে হাসিমুখে ফিরে যাচ্ছেন ঘরে।

সকাল থেকে সুজানগরের মানিকহাট ইউনিয়নে মানিকহাট প্রাইমারি স্কুল, রানিনগর, খলিলপুর, ভায়নাকেন্দ্রসহ কয়েকটি এলাকার কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, কেন্দ্রগুলোর সামনে ভোটারের উপচে পড়া ভিড়। অনেকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করছেন ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য।

মানিকহাট কেন্দ্রের ভোটার আফসার আলী বলেন, সবার আগে ভোট দিতে সকাল সকাল কেন্দ্রে এসেছি। কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা শফিউল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা-ব্যবস্থা পর্যাপ্ত রয়েছে। এই কেন্দ্রে ২ হাজার ১০০ ভোটার রয়েছেন।

ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, কোনো ঝামেলা ছাড়া ভোট দিতে পেরেছি। আমাদের অনেক শঙ্কা ছিল ভোটকেন্দ্র যেতে পারব কি না। তবে কোনো সমস্যা ছাড়াই ভোটকেন্দ্র আসছি। নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিয়েছি।

ভায়না ইউনিয়নের ভোটকেন্দ্রে আসা আফসানা বলেন, ভোটগ্রহণের দুইদিন আগেও আমাদের ইউনিয়নে নৌকা-বিদ্রোহী প্রার্থীদের সংঘর্ষে একজন মারা গেছেন। তখন থেকেই আমরা আশঙ্কা করছিলাম কেন্দ্রে যেতে পারব না। সকালে কেন্দ্রে এসে ভালো লাগছে।

তবে একই রানিনগরবাদাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোটারদের তেমন উপস্থিতি চোখে পড়েনি। কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন। তবে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম। বেলা বাড়লে ভোটার বাড়বে।

মানিকহাট ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থীর শফিউল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন। ভোটাররা ঠিকমতো ভোট দিলে বিপুুল ভোটে জয়ীর হওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।

একই ইউনিয়নের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী আব্বাস আলী মল্লিক বলেন, শতশত নারী-পুরুষ ভোটকেন্দ্র আসছেন। পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিচ্ছে। তবে ভোট গ্রহণের আগে শঙ্কা ছিল ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে পারবে কি না? এমন শঙ্কা এখন নেই বলে জানান তিনি।

সুজানগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা খাতুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটগ্রহণের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে ভোটাররা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন। কোনো প্রার্থী বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করলে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, সুজানগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্নের লক্ষ্যে ৪ প্লাটুন বিজিবি, ৯০০ পুলিশ ফোর্স মাঠে রয়েছে। এছাড়াও র‌্যাব, আনসার সদস্য সাদা পোশাকের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। 

জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। আমরা আশাবাদী ভোটাররা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর