চমক দেখিয়ে জয়ী হন শাহিদা বিবি

‘অনেক কষ্ট, তবু মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। সব সময় গরিব, দুঃখী ও বঞ্চিত মানুষের পাশে থেকেছি। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আজ তার মূল্যায়ন পেয়েছি। জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করেছি, তারা বিপুল ভোটে আমাকে বিজয়ী করেছে।’

এমনটাই বলেছেন খুলনার ডুমুরিয়ার মাগুরাঘোনা ইউনিয়নে নারী সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচিত তৃতীয় লিঙ্গের শাহিদা বিবি (৪৩)। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচনে তিনি ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত সদস্য হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী-সন্তান নেই, জনগণই আমার সব। তাদের জন্য কিছু করতে চাই। মানুষ আমাকে যে ভালোবাসা দিয়েছে, তার প্রতিদান দিতে চাই। এ জন্য সবার সহযোগিতাও চান শাহিদা।

সংরক্ষিত আসনে চারজন মহিলা প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে শাহিদা মাইক প্রতীকে নিয়ে ২ হাজার ৭৪০ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাইলা বেগম পেয়েছেন ১ হাজার ৭১৪ ভোট।

ডুমুরিয়ার ৬ নং বেতাগ্রাম সদর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শাহিদা বিবি বলেন, মানুষের ভালোবাসা আমাকে প্রার্থী হতে অনুপ্রাণিত করেছে। আগে থেকেই মানুষের জন্য কাজ করতাম। মানুষের অফুরন্ত ভালোবাসায় বিপুল ভোটে আমি নির্বাচিত হয়েছি। এখন জনগণের জন্য কিছু করতে চাই। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই।

খুলনা জেলায় ইউপি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আমিই (তৃতীয় লিঙ্গের) প্রথম বিজয়ী হয়েছি। আমি আমাদের অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। আর সব সময়ই গরিব, দুঃখী ও বঞ্চিত লোকদের পাশে থাকব। ভবিষ্যতে আমি ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে আমি প্রার্থিতা নিয়ে আসব। তিনি আমাকে প্রার্থী করবেন, সেই আশায় রয়েছি।

শাহিদা বলেন, সমাজে আমরা অবহেলিত হওয়া সত্ত্বেও জনগণ আমাকে নির্বাচিত করে সমাজে একটি স্থান দিয়েছেন। তাই এলাকার সব ভোটারের কাছে আমি ঋণী। একই ওয়ার্ডের ভোটার মুক্তা মণিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে সাত-আটজন ‘হিজড়া’ এসে আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছে। তাদেরও অসংখ্য ধন্যবাদ।

তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার মুক্তা মণি ঢাকা পোস্টকে বলেন, শাহিদা বিবি নির্বাচিত হওয়ায় আনন্দ লাগছে। তার বিজয়ে আমরা খুশি। এর আগে সাতক্ষীরায় আমাদের একজন ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। আর খুলনায় প্রথম শাহিদা বিবি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলেন। এটা আমাদের জন্য গর্বের।

মোহাম্মদ মিলন/এনএ