প্রশান্তির খোঁজে এসে নিঝুম দ্বীপে মিলছে ভোগান্তি

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের প্রধান সড়ক ও সেতু ভেঙে খালে পড়ায় ভোগান্তি কমছে না সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষদের। বর্তমানে কাঠের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানে যেতে ছোয়াখালী খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ধসে পড়েছে। সেতু থেকে নেমে বাজার পর্যন্ত জাতীয় উদ্যানে প্রবেশের প্রধান সড়কের একই অবস্থা। বেশ কয়েকটি জায়গায় আরসিসি ঢালাইয়ের নিচ থেকে মাটি সরে সড়ক ভেঙে খালে পড়ে আছে।

পর্যটক ও স্থানীয়দের চলাচলের জন্য ভেঙে পড়া সেতুর পাশে কাঠ দিয়ে অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে সাঁকো। ওই সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। ভারী মালামালও সাঁকো দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পর্যটকরা এই সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করছেন।

জোয়ারের পানিতে আরসিসি ঢালাইয়ের নিচ থেকে মাটি সরে নিঝুম দ্বীপের প্রধান সড়ক খালে পড়ে গেছে। সড়ক ও সেতুটি শিগগিরই নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন মাস আগে বর্ষার প্রবল জোয়ারে নিচ থেকে মাটি সরে সেতুটি ভেঙে পড়ে। এরপর কিছু দিন নৌকা দিয়ে মানুষ পারাপার হলেও যানবাহন ও মালামাল পারাপারে অসুবিধা হতো। নিঝুম দ্বীপের ইউপি চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন সেতুর পাশে কাঠের সাঁকো তৈরি করে দিয়েছেন। এই সাঁকো দিয়ে মানুষ চলাচল করলেও ভারী যানবাহন পারাপারে সমস্যা হচ্ছে।

আরেক বাসিন্দা মো. রাসেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, এখন শীতের মৌসুম। নিঝুম দ্বীপে পর্যটক আসা শুরু করেছে। ভাঙা সেতু ও সড়কের কারণে পর্যটকদের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে পর্যটকদের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। 

নিঝুম দ্বীপে ঘুরতে এসেছেন আকরাম হোসেন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দ্বীপে আসার যোগাযোগ ব্যবস্থা খুবই খারাপ। সড়কগুলো যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। উদ্যানে প্রবেশের মুখে সেতু ভাঙা থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তারপরও বনের ভেতরে কয়েকটি হরিণের বিচরণ দেখে মনে হলো দ্বীপে আসাটা সার্থক হয়েছে।

নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারের আমেনা আবাসিক হোটেলের মালিক মো. কচি মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটক এই দ্বীপে ঘুরতে আসেন। শীতের সময় চলে এসেছে। তবে পর্যটকের চাপ বাড়েনি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হলে পর্যটকদের জায়গা দেওয়া যাবে না। 

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) তপন চন্দ্র দেবনাথ ঢাকা পোস্টকে বলেন, সেতু ও সড়কের কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে। বর্তমানে প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য চিঠি ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চিঠি হাতে পেলেই আমরা কাজ শুরু করে দেব। আশা করি জনদুর্ভোগ খুব দ্রুত লাঘব হবে।

হাসিব আল আমিন/এসপি