প্রতিশ্রুতি পূরণে ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।

তিনি বলেন, করোনা মহামারি মোকাবিলায় ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে পিপিই, চিকিৎসাসামগ্রী, টেস্টিং কিট এবং ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়েছে। পাশাপাশি এ দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির অঙ্গীকার বিনিময় কর্মশালার মাধ্যমে সহায়তা কর হয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক অনেক ভালো। ভারতের প্রয়োজনে প্রকৃত বন্ধু হয়ে বাংলাদেশও পাশে দাঁড়িয়েছিল। এই সম্পর্ক ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে।

মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে উপহার স্বরূপ রংপুর সিটি কর্পোরেশনকে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

দোরাইস্বামী বলেন, করোনা মহামারির শুরুর দিকে ভারতীয় জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন চিকিৎসাসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়। জনগণের কল্যাণে ভারত সামর্থ্য অনুযায়ী বাংলাদেশকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই ধারাবাহিকতায় নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা এগিয়ে নিতে রংপুর সিটি করপোরেশনকে একটি অত্যাধুনিক অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়া হলো।

সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, সীমান্তে যেকোনো হত্যাকাণ্ড বা হতাহত উভয় দেশের জন্য দুঃখজনক। দুই দেশের সম্মিলিত পদক্ষেপে এ ধরনের ঘটনা নিরসন করতে হবে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষীকে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, যদি তাদের ওপর হামলার কোনো শঙ্কা না থাকে, তবে যেন সীমান্তে কোনো অবস্থাতেই গুলি না চালায়। আমরা কোনো দেশেই সীমান্ত হত্যা চাই না।

তিনি আরও বলেন, কোনো জীবন নষ্ট হওয়া কখনোই কাম্য নয়। সীমান্তে অবৈধ কার্যক্রম বেড়েছে। বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে উপকৃত হতে চেষ্টা করছে। সীমান্ত হত্যা বন্ধে চোরাচালান বন্ধ করতে হবে। চোরাচালানের কারণে হত্যার ঘটনা ঘটছে। তবে আগামীতে সীমান্ত হত্যার মতো ঘটনা যেন না ঘটে সে ব্যাপারে ভারত সরকার সজাগ রয়েছে।

এ ছাড়াও তিস্তার পানিবণ্টন, উন্নয়নে অংশীদারিত্ব, ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিভিন্ন ইস্যুতে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি। এ সময় প্রতিশ্রুত তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে জটিলতা রয়েছে উল্লেখ করে দোরাইস্বামী বলেন, চুক্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দু’দেশের মধ্যে সবধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
 
এ সময় অনুষ্ঠানে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার (রাজশাহী) সঞ্জিব কুমার ভাট্টি, রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিঞা, প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে রংপুর নগরের মাহিগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে নির্মিত নতুন একাডেমিক ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নেন বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী। ভারতীয় হাইকমিশনের অর্থায়নে নতুন এ ভবনটি নির্মিত হয়েছে। সেখানে বক্তব্যে দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতির চালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার বিচক্ষণ নেতৃত্বে এদেশ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছে।

এর আগে সকালে তিনি রংপুর সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। বিকেলে রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ব্যবসায়িক আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই