কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশে বর্তমানে বছরে এক কোটি টনের বেশি উন্নত জাতের আলু উৎপাদন হচ্ছে। দেশে চাহিদা রয়েছে ৬০ লাখ টন থেকে ৭০ লাখ টনের মতো। দেশে উৎপাদিত আলুতে পানির পরিমাণ বেশি হওয়ায় বিদেশে চাহিদা কম। সেজন্য বিদেশে চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহারযোগ্য আলুর আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সে লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে

বুধবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার পরিদর্শনে শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশ থেকে উচ্চ ফলনশীল এবং শুষ্ক পদার্থের উপস্থিত কম সম্পন্ন রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহারযোগ্য আলুর জাত চাষের ফলে আলু রপ্তানির অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি একই পরিমাণ জমি থেকে দ্বিগুনেরও বেশি পরিমাণ আলু উৎপাদন সম্ভব হবে।

এ সময় মন্ত্রী রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহারযোগ্য আলুর প্লট, আলু ফসলের মিউজিয়াম, ড্রাগন ও খেজুর বাগান প্রভৃতি পরিদর্শন করেন। তার সঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ, বারির মহাপরিচালক নাজিরুল ইসলাম, গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচাল ড. মো. এছরাইল হোসেন, নীলফামারীর জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোকলেছুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ডোমার ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) ‘মান সম্পন্ন বীজ আলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরণ’ প্রকল্পের আওতায় ডোমার খামারে ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন করা হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন জাতের উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য ট্রায়াল প্লট স্থাপন ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। 

এ  প্রকল্পের আওতায় উচ্চ ফলনশীল, রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহার উপযোগী আলুর জাত পরিচিতি ও জনপ্রিয়করণের জন্য বিএডিসি আমদানিকৃত এবং বারি উদ্ভাবিত সম্ভামনাময় ২০টি জাত নিয়ে প্রদর্শনী প্লট ও মাল্টিলোকেশন টেস্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। বীজ আলুর বীজমান অক্ষুণ্ন রাখার লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে বীজ আলু উৎপাদন, সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের নিমিত্তে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি যেমন- বীজ আলু প্লান্টার, গ্রেডার, ড্রায়ার ইত্যাদি যন্ত্রের মাধ্যমে কার্যক্রম এ খামারে শুরু হয়েছে। আলু বীজ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়াতেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ চাষি, বেসরকারি বীজ উৎপাদনকারী ও ডিলারদেরকে নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বীজ আলুর উৎপাদন ও বিপণনে জ্ঞান বৃদ্ধি করা হচ্ছে। আলু বীজ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়াতেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিএডিসির আওতাধীন বিশেষায়িত দুটি ভিত্তি বীজ আলু উৎপাদন খামার রয়েছে। যার মধ্যে ডোমার খামার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মোট জমির পরিমাণ ৫১৬ একর। আলু চাষের উপযোগী ৩১০ একর। অবশিষ্ট ২০৬ একর জমিতে অন্যান্য ফসল ও স্থাপনা রয়েছে। চলতি ২০২০-২১ উৎপাদন বর্ষে ২৫৬ একর জমিতে বীজ আলু উৎপাদন করা হয়েছে। এছাড়াও এখানে দুটি টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি রয়েছে।

এই প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ২৮টি জোনে চুক্তিবদ্ধ চাষির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ব্যবহৃত ও প্রত্যায়িত বীজ আলু উৎপাদন করা হচ্ছে। 

মাহমুদ আল হাসান রাফিন/আরএআর