তিনজনকে ধরেছি, এর মধ্যে দুজন দিয়েছে ১০ হাজার করে ২০ হাজার টাকা। তৃতীয় জন দিয়েছে ১৩ হাজার টাকা। পুলিশ পরিদর্শককে (তদন্ত) দিয়েছি ১৩ হাজার টাকা। বাকিটা আমি রেখেছি। 

১ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের কল রেকর্ডে এভাবেই বলছিলেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান।অপরপ্রান্তে কথা বলেছেন স্পেন ছাত্রলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রায়হান।

এ ঘটনার পর সোমবার (২২ নভেম্বর) চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের পুলিশ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমানকে চট্টগ্রাম জেলায় বদলি করা হয়েছে। 

ভুক্তভোগী নারী রুফিয়া খাতুন (৪০) ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে সম্রাটকে (২২) চরহাজারী বাজার থেকে থানায় এনে হাজতে আটকে রাখে। থানা থেকে এসআই মাহফুজ আমাকে টাকা দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিতে বলে। আমি যদি টাকা না নিয়ে যাই তাহলে আমার ছেলেকে কারাগারে পাঠাবে বলেও হুমকি দেয়। আমি ১৩ হাজার ৭০০ টাকা নিয়ে যাওয়ার পর আমার ছেলেকে ছেড়ে দেয়।

কল রেকর্ডের সত্যতা নিশ্চিত করে স্পেন ছাত্রলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন রায়হান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এসআই মাহফুজ টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। থানায় আটকে মোট ৩ জন থেকে ৩৩ হাজার ৭০০ টাকা নেওয়া হয়। সেখান থেকে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদকে ১৩ হাজার টাকা দিয়েছেন বলে মাহফুজ আমাকে জানায়। 

অভিযোগের বিষয়ে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমি এমন কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না। আমাকে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে ফাঁসাতে চাচ্ছে। বদলির আদেশ পেয়েছেন বলেও জানান মাহফুজুর রহমান।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদের বক্তব্যের জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করেও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহফুজুর রহমানকে চট্টগ্রাম জেলায় বদলি করা হয়েছে। তবে থানায় আটকে রেখে টাকা আদায়ের বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কেউ যদি সুনির্দিষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

হাসিব আল আমিন/এমএএস