ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

দিনাজপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ঘোড়াঘাট উপজেলা। এ উপজেলায় দেড় লক্ষ মানুষের বসবাস। আর এসব মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র আশ্রয়স্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সেখানে সেবার মান ভালো হলেও স্বল্পসংখ্যক ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ডাক্তারদের। আর এতে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।

ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্যমতে, ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ১৩ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৮ জন। আবার এই আটজনের মধ্যে বিভিন্ন কারণে ছুটিতে রয়েছেন আরও ৪ জন। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছেন ৪ জন চিকিৎসক। অন্যদিকে নেই আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন আবার উন্নত অপারেশন থিয়েটার থাকলেও একজন অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসকের অভাবে হয় না কোনো অপারেশন।

চিকিৎসা নিতে আসা রহিমা বেগম জানান, ‘আমরা গরিব মানুষ বাবা। তাই এখানে চিকিৎসা নিতে আসি। এখানকার চিকিৎসা ভালো। সব ধরনের ওষুধ পাই কিন্তু আমাদের কিছু পরীক্ষা বাইরে করতে হয়, যেগুলো হাসপাতালে করলে কম খরচে পার হতো।’

সোবহান নামের আরও একজন জানান, ‘বাইরে আল্ট্রাসনোগ্রাম টেস্ট করাতে গেলে অনেক টাকা লাগে কিন্তু সেটা সরকারিভাবে আমাদের হাসপাতালে করালে কম টাকা দিয়ে করাতে পারতাম। আমাদের আশাপাশে তেমন কোনো ভালো হাসপাতাল নেই। তাই আমাদের এটার ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হয়। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা যেন করে।’

মুজাহিদ, নাসিরসহ আরও কয়েকজন জানায়, আমাদের উপজেলা থেকে জেলা শহর অনেক দূরে। জরুরি কোনো রোগীর অপারেশন করাতে লাগলে আমরা এখানে করাতে পারি না, এতে করে রাস্তায় যাবার পথেই অনেকের মৃত্যু হয়। আমাদের হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার আছে কিন্ত একজন ডাক্তার নেই বলে আমরা অপারেশন করাতে পারি না।

ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মুরাদ কবির বলেন, আমাদের এই হাসপাতালে প্রতিদিন আউট ডোরে ৬শ থেকে ৭শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। আমরা অল্পসংখ্যক চিকিৎসক থাকায় তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। আমরা আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে তাদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুর নেওয়াজ বলেন, ডাক্তারের চাহিদা পাঠানো হয়েছে আশা করছি দ্রুত আমরা ডাক্তার পাবো। আর এখানে চিকিৎসার মান অনেক ভালো। যে কারণে প্রতিদিন অনেক রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এখানে যেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা যন্ত্র নেই সেগুলো চাহিদা পাঠানো হয়েছে।

এমএসআর