রাখি মণ্ডল

বৃদ্ধা রাখি মণ্ডলের বয়স ১০৭ বছর অতিক্রম করেছে। শ্রবণশক্তিও হারিয়েছেন। স্বামী রিকাত মণ্ডল অনেক আগেই মারা গেছেন। দুই সন্তানের অবহেলায় আশ্রয় হয়েছে নিজ বাড়ির একটি ভাঙা খুপরিতে। অথচ দুই ছেলে থাকেন রঙিন দালান কোঠায়।

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দাদুয়া গ্রামের ঘটনা এটি। রাখি মণ্ডল ও তার স্বামী রিকাত একসময় জীবনের সবটুকু শ্রম দিয়েছেন পরিবারের জন্য। করেছিলেন নিজস্ব কিছু জমিও। অথচ বৃদ্ধ বয়সে একটি পাটকাঠির খুপরিতে জীবন কাটাতে হচ্ছে তাকে। এখন বেঁচে থেকেও পরপারের দিন গুনতে হচ্ছে তাকে। 

স্থানীয়রা জানায়, দুই ছেলে রয়েছে রাখি মণ্ডলের। বড় ছেলে আনছার মণ্ডল ও ছোট ছেলে ছামছু মণ্ডল। তাদেরও ছেলে-মেয়ে হয়েছে। সবগুলোকেই বিয়ে দিয়ে নিজ বাড়িতে দালান কোঠায় রেখেছেন।

সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তায় কঠোর পরিশ্রম করে গড়েছিলেন চাষাবাদ করার জন্য কিছু জমি ও বসত ভিটা। অনেক কষ্ট করে দুই সন্তানকে বড় করেছিলেন। অথচ সেই সন্তানরাই এখন তাকে অযন্ত অবহেলায় ফেলে রেখেছেন। দেখার যেন কেউ নেই।

পাটকাঠি দিয়ে তৈরি একটি কাঁচাঘরে একটি থালা, কলসি, গ্লাস ও মাটিতে ভেজা রয়েছে স্যাঁতসেঁতে বিছানা। খাওয়াদাওয়া সব কিছু ওইটুকু জায়গার মধ্যেই করতে হয় তাকে।

রাখি মণ্ডলের ছেলে আনছার মণ্ডল জানান, মা অসুস্থ। ভালোভাবে চলাফেরা করতে পারেন না। বিছানায় নষ্ট করেন। তারপরও অনেক বয়স হয়ে গেছে। তাই খুপরি ঘরে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে ধারাবারিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন ঢাকা পোস্টকে জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তমাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে জানান, দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

তাপস কুমার/এমএসআর