মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নে একটি কারখানায় পানি ও চিনি দিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে ভেজাল তালমিছরি। বিএসটিআই ও পরিবেশ অধিদফতরের অনুমোদন ছাড়াই তৈরি এসব মিছরি ছড়িয়ে পড়ছে এই জেলা ও অন্যান্য জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাটবাজারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকৃতপক্ষে খাঁটি তালের রস জ্বাল দিয়ে একটি পাত্রে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় চট দিয়ে ঢেকে রাখার কথা বদ্ধ ঘরে। সপ্তাহখানেক পর ওপর ও নিচের অংশ শুকিয়ে দানা আকারে তালমিছরি তৈরি হওয়ার নিয়ম। প্রকৃত তালমিছরি হার্নিয়া, হৃদরোগ, সর্দি-কাশি, দৃষ্টিশক্তি, কিডনি, পেটব্যথা, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, মুখের আলসার, গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ, ডায়রিয়া, শিশুদের ব্রেইন, আর্থ্রাইটিস, শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা, স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর জন্য খুবই উপকারী।

এদিকে পুরান বাউশিয়া গ্রামে তৈরি তালমিছরি মানবস্বাস্থ্যের জন্য চরম ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নে পুরান বাউশিয়া হাইস্কুল রোড-সংলগ্ন হাসিনা ফুড প্রোডাক্ট নামে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল মিছরি উৎপাদন করে বাজারজাত করছে। প্যাকেটে মিছরি তৈরিতে চিনি, পানি ও দুধের কথা উল্লেখ করলেও দুধ ছাড়াই পানি আর চিনি দিয়ে তৈরি করে লেখা হয় ‘অরজিনাল হাসিনা তালমিছরি’। এক কেজি করে প্রতিটি প্যাকেট তৈরি করা হয়। মান নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ক্রেতা ও বিক্রেতাদের আগ্রহ দৃষ্টি আকর্ষণ করতে প্যাকেটের মোড়কে মেয়াদোত্তীর্ণ সিল ব্যবহার করছে তারা।

এদিকে কারখানার শ্রমিকরা মিছরিগুলো হাতের সুরক্ষা গ্লাভস ছাড়াই প্যাকেটজাত করছেন। তারা জানান, মাঝেমধ্যে মিছরি তৈরিতে ছানা ব্যবহার করা হয়। ছানাগুলো অনেক দিনের পুরোনো। বেশির ভাগ সময় পানি ও চিনি দিয়ে তালমিছরি তৈরি হয়।

এ বিষয়ে কারখানার মালিক হক মিয়া বলেন, অনুমোদন নিয়েই মিছরি তৈরি করা হচ্ছে। তবে চিনি ও পানি দিয়ে মিছরি তৈরির কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সারা দেশে এভাবেই চিনি ও পানি জ্বাল দিয়েয়ে তালমিছরি তৈরি করা হয়। আমি করলে দোষ কী?

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক আখতারুজ্জামান টুকু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা লোক পাঠিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। তারপর ব্যবস্থা নেব।

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামী সপ্তাহে আমরা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করব। তখন বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেব।

ব.ম শামীম/এনএ