সবজি-ফুল-ফল চাষ করে তাক লাগিয়েছেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক
রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে জৈব সারের মাধ্যমে ৬৩ প্রজাতির সবজি, ফুল ও ফলের চাষ করে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান। কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরি এলাকায় বাংলোর আঙিনা এবং পাশের বোটানিক্যাল গার্ডেনের জমিতে এখন সবুজের সমারোহ।
জানা গেছে, যোগদানের আট মাসের মধ্যে বাংলোর চারদিকে ফুল-ফল-সবজির আবাদ করে সফল হয়েছেন তিনি। এসব চাষে কোনো প্রকার কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হচ্ছে না। জৈব সার ও বন্ধু পোকামাকড় ব্যবহার করা হচ্ছে ।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে ডিসি বাংলোর পাশে সবজি খেতে গিয়ে দেখা যায়, স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সবজি বাগান পরিচর্যা করছেন জেলা প্রশাসক। পাশাপাশি লাল শাক, পালং শাক, সরিষা শাক, স্কোয়াশ, পেঁয়াজ, ফুলকপি, বাঁধাকপি তুলে ঝুড়িতে রাখছেন।
বিজ্ঞাপন
এ সময় কথা হয় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, শত ব্যস্ততার মধ্যদিয়ে সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত বাগানে কাজ করি। আমার সহযোগীরা এখানে কাজ করে। প্রতিদিন আমরা অল্প অল্প করে সবজি সংগ্রহ করি । নিজেরাও খাই অন্যদেরও বিতরণ করি। এই সবজি ভেজালমুক্ত। আবার কোনো ধরনের কিটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয় না। জৈবিক উপায়ে এসব চাষ হচ্ছে।
সবজি চাষে আগ্রহী হলেন কীভাবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি খুব ছোট বেলা থেকে শাক-সবজি চাষে আগ্রহী ছিলাম। বিগত সময় বিভিন্ন স্থানে কর্মরত থাকাকালীন ছাদ বাগান থেকে শুরু করে বাড়ির আঙিনায় ফুল-ফল-সবজির বাগান করেছি। বিশেষ করে করোনাকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন ঘোষণা দিলেন এক ইঞ্চি জমি যেন খালি না থাকে, তখন ব্যাপকভাবে সবজি চাষ শুরু করি।
এখানে প্রায় ৪০ প্রজাতির বেশি সবজি রয়েছে। যেমন লাউ, মিষ্টিকুমড়া, কাঁকরোল, করলা, স্কোয়াশ, শিম, ফুলকপি, লেটুস, বাঁধাকপি, কলমি, ব্রকলি, পটল, টমেটো, বেগুন, আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ এই সময়ে পাওয়া যায় এসব সবজি। সেইসঙ্গে ১৬ ধরনের ফুল ও সাত ধরনের ফলের গাছ রয়েছে। আমার স্ত্রী উদ্ভিদ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমার একটি সুন্দর বীজতলা রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ফুলের অসংখ্য চারা রয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৯ হাজার গাঁদা ফুলের চারা রয়েছে। আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে আমাদের শিশু কিশোররা যেন প্রকৃতিকে ভালবাসে। বিশেষ করে স্কুলগামী শিশুরা এই শাকসবজির বাগান দেখে নিজেরা উজ্জীবিত ও স্বাবলম্বী হবে। তাদের মনকে প্রফুল্ল রাখবে। সেসঙ্গে পারিবারিক চাহিদা মেটাতে সহায়তা করবে।
কুমিল্লা আদর্শ সদরের উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আউলিয়া খাতুন বলেন, কুমিল্লার জেলা প্রশাসক সবজি, ফল, ফুল চাষে খুবই আগ্রহী। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকি। স্বল্প পরিসরে ব্লক তৈরি করে প্রায় সব ধরনের সবজি, ফল, ফুলের চাষ করা হচ্ছে। জৈব সার ব্যবহার করে এসব চাষ করছেন, ফলনও ভালো হচ্ছে। কৃষিপ্রেমী জেলা প্রশাসকের এই বাগান অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করবে।
এসপি