কয়েক দিন আগেও মেহেদীর বাড়িতে ছিল মানুষের সরব উপস্থিতি। দিন-রাত অতিবাহিত হচ্ছিল নির্বাচনী আমেজে। নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছিল, জনপ্রিয়তাও বাড়ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। আর তাতেই তার পরিবার, স্বজন, কর্মী ও সমর্থকদের মাঝে নেমে আসে শোক।

বাড়িতে এখন আর নির্বাচনের আমেজ নেই। তার বাবা আনোয়ার হাসানের আকুল আবেদন, ‘আমরা আর নির্বাচন চাই না। নির্বাচন কমিশন শুধু আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দিক।’

শনিবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ছেলের সন্ধান চেয়ে নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এমন আহাজারি করতে দেখা গেছে মেহেদীর পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের।

মেহেদী হাসান (৪১) কালিয়াকৈর পৌর এলাকার শফিপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি এবার কালিয়াকৈর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হন তিনি। নিখোঁজের তিন দিনেও খোঁজ মেলেনি তার। তার কর্মী-সমর্থকরা এখন নির্বাচনী প্রচার বাদ দিয়ে তার খোঁজে দিন পার করছেন। তার স্বজনরাও তাকে ফিরে পেতে ঘুরছেন প্রশাসনের পেছনে।

গত ২৫ নভেম্বর তার সন্ধান চেয়ে তার স্বজনরা কালিয়াকৈর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। বাবা ও মায়ের একমাত্র ছেলে মেহেদী। কৃষি ডিপ্লোমা ও প্রাণিসম্পদের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়ে মেহেদী স্থানীয় শফিপুর বাজারে প্রাণী ওষুধের ব্যবসা করতেন। স্থানীয়দের অনুরোধেই তিনি এবার পৌর নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিলেন।

নিখোঁজ মেহেদী হাসানের বাবা আনোয়ার হাসান জানান, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর মেহেদী আর বাড়ি ফিরে আসেননি। সকাল আটটার দিকে তার অনুসারী লোকজন বাড়িতে ভিড় করলে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন তার ব্যবহৃত মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যায়। পরে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পর তার কোনো খোঁজ না পেয়ে কালিয়াকৈর থানায় জিডি করে নিখোঁজের বিষয়টি নির্বাচন কর্মকর্তাকে জানানো হয়।

মেহেদী হাসানের সমর্থক ফাইজুর রহমান বলেন, নির্বাচন অনুষ্ঠান শুরুর পর মেহেদী হাসানের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। তার জয়লাভ করার সম্ভাবনা ছিল। আর এটাই কাল হয়ে গেছে তার জন্য।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মানোয়ার হোসেন চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে জানান, প্রার্থী নিখোঁজের বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। তাকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা হচ্ছে, তবে এখনো পাওয়া যায়নি।

শিহাব খান/এনএ