রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন দ্বন্দ তুঙ্গে উঠেছে। সমর্থিত প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ার ক্ষোভে পুড়ছেন কর্মী-সমর্থকরা। মিটিং-মিছিল করেও প্রার্থী পরিবর্তন না হওয়ায় এবার একসঙ্গে ৪৭ জন গণপদত্যাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন।

ঘটনাটি উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নে ঘটেছে। পদত্যাগকারী সবাই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকেন্দার আলীর কর্মী-সমর্থক ও অনুসারী। বুধবার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে মাঠেরহাটে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রানা বলেন, তৃণমূলকে উপেক্ষা করে বর্তমান চেয়ারম্যান ডলু শাহকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বদরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক টুটুলের শ্যালক হওয়ায় বারবার ডলু শাহকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

নৌকার প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন নেতা। তার কারণে ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ভেবে দেখতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের সঙ্গে ডলু শাহের সম্পর্ক ভালো নয়। তিনি জনপ্রতিনিধি হয়েও মানুষের ভালোবাসা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। দলের লোকজন যাকে চায় না, সাধারণ মানুষ তাকে কেন ভোট দেবে? শুধুমাত্র মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে তাকে নৌকা দেওয়া হয়েছে। আমরা নৌকা বাঁচাতে প্রার্থী পরিবর্তন দাবি করছি। নইলে পদত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় নেই।

এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হাশেম লোহানী, জাহিদুল হক, হাছান লোহানী, আব্দুর রাজ্জাক, বেলালসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে লোহানীপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদত্যাগের বিষয়টি আমিও শুনেছি। এখন পর্যন্ত কারো কাছ থেকে কোনো লিখিত কাগজপত্র হাতে পাইনি। তবে কেউ দল মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচার-প্রচারণা চালালে কিবাং বিরোধিতা করলে তা বিরুদ্ধেও সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।  

প্রসঙ্গত, গত ২৫ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে উপজেলার ১০টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে ৫৯ জন, সংরক্ষিত আসনে ১৪৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৫৮ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৬ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন, প্রতীক বরাদ্দ ৭ ডিসেম্বর এবং নির্বাচনে ভোটগ্রহণ ২৬ ডিসেম্বর।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস