সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের চানমেটুয়ানী গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ মুছা মন্ডল। আগে চটের বস্তা দিয়ে ঘেরা জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করতেন। শেষ বয়সে এসে বসবাসের জন্য পেলেন রঙিন ঘর। এতে আনন্দে আত্মহারা তিনি। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস তার কাছে ঘরটি হস্তান্তর করেন। 

এ সময় মুছা মন্ডল বলেন, স্বপ্নেও ভাবিনি শেষ বয়সে এসে রঙিন ঘর পাব। দিন শেষে এখন আর চটের বেড়া দেওয়া মাটির বিছানায় ঘুমাতে হবে না।

১৬ বছর আগে স্ত্রীকে হারিয়ে একাকী জীবন চালিয়ে যাওয়া মুছা মন্ডল এখন প্রতিদিন রাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। শুধু ঘরই নয়, তাকে লেপ-তোশক, চৌকি, শীতের পোশাক, জায়নামাজ, খাদ্যসামগ্রী, টিউবওয়েল ও নগদ ৭ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বৃদ্ধ মুছা মন্ডলের জন্য সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাসের মাধ্যমে কানাডা প্রবাসী এক ব্যক্তি প্রতি মাসে ৩ হাজার করে টাকা দেবেন বলে জানা গেছে। 

ঘরসহ সব কিছু পেয়ে মুছা মন্ডলের মুখে এখন আনন্দের হাসি। ঘর পেয়ে কেমন লাগছে- জানতে চাইলে মুছা মন্ডল বলেন, আমি একাকী মানুষ চটের বেড়া দিয়ে ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছিলাম। স্বপ্নেও ভাবিনি যে আমি একখানা নতুন রঙিন ঘর পাব। এই বয়সে এত সুন্দর ঘরে থাকতে পারব। আমি ভীষণ খুশি হয়েছি ঘর-টিউবওয়েলসহ সব কিছু পেয়ে। যতদিন বেঁচে থাকব আপনাদের সবার জন্য দোয়া করব। 

মুছা মন্ডলের ঘর তৈরিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেছেন শামীম হোসেন, তারেক শাহরিয়ার, আব্দুর রহিম, ইসমাইল হোসেন ও মহির উদ্দিনসহ কয়েকজন। 

সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুছা মন্ডল দীর্ঘদিন ধরে চটের বস্তা দিয়ে তৈরি একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছিলেন। সরেজমিনে চটের ঘরটি দেখে নিজেদের খুব অপরাধী মনে হচ্ছিল। সব কিছু দেখে মুছা মন্ডলের বিস্তারিত লিখে ফেসবুকে পোস্ট দেই।  ফেসবুকের কল্যাণে সংগ্রহীত ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে খুব দ্রুত ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করেছি। 

তিনি বলেন, আমরা সবাই যদি যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি, তাহলে আমাদের সমাজে অবহেলিত কোনো মানুষ থাকবে না। আমাদের সবারই সমাজের কল্যাণে এগিয়ে আসা দরকার। আমি শুধুমাত্র চেষ্টা করি। ফেসবুক বন্ধুরা এগিয়ে আসে বলেই প্রতিটি মানবিক কাজের জয় হয়। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর