লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনির কর্মী রিয়াজ উদ্দিন মিজিকে ক্রসফায়ারসহ হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। ভবানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল খালেক বাদলের ভাতিজা আবদুল্লাহ আল মামুন রাব্বি মোবাইল ফোনে কল করে তাকে হুমকি দেন বলে জানান।

শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে রিয়াজের মোবাইল ফোনে রাব্বি কল দেন। তবে প্রতিটি কথার আগে ও পরে রাব্বি রিয়াজকে গালামন্দ করেন। ১ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের এমন একটি কল রেকর্ড ঢাকা পোস্ট প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

রেকর্ডিংয়ে রাব্বিকে বলতে শোনা যায়, ‘এই মিজি নিরে। মিজি, যদি আর একটা স্ট্যাটাস দেস নৌকার বিরুদ্ধে, তাহলে তোরে বাড়িত তন (বাড়ি থেকে) ধরি আনি (এনে) ক্রসফায়ার করিয়াম। নৌকার বিরুদ্ধে কোনো স্ট্যাটাস দিলে ডাইরেক্ট আঁকি হালাইয়াম তুই যিয়ানেই থাস (থাকিস)। তুই বাড়িত নি হেডা (সেটা) ক (বল)। তুই নৌকার বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস দিবি তো, তুই মহানগর যুবলীগ করস তো, যুবলীগের নাম বেচস কেন? তুই বিএনপির লগে লিয়াজু করে আওয়ামী লীগের পেস্টুন ভাঙস, এগিন (এগুলো) মাইনসে জানে না। বিএনপির লগে লিয়াজু করে যুবলীগের নাম বেচস (বিক্রি করিস)। মারি হালাইয়াম, ডাইরেক্ট মারি হালাইয়াম। তোর বাবা হালিম মাস্টাররে হবে ওয়াপদা অফিসে নাম ধরি কইছি।’

এ বিষয়ে রিয়াজ উদ্দিন মিয়াজি বলেন, কল পেয়ে আমি রাব্বিকে সালাম দিয়েছি। কিন্তু রাব্বি শুরু থেকেই আমাকে ধমক দিয়ে কথা বলে। প্রতিটি বাক্যে সে আমাকে খারাপ ভাষায় গালাগাল করেছে। আমাকে ক্রসফায়ার দেবে, মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে। নিজের জীবনের নিরাপত্তায় আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করব। আমি নৌকার বিরুদ্ধেও কোনো স্ট্যাটাস দিইনি। 

অভিযোগ অস্বীকার আবদুল্লাহ আল মামুন রাব্বি বলেন, হুমকি তো দূরের কথা, আমি কাউকে কল দিই নাই। আর কেনইবা হুমকি দেব? আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। ওই কল রেকর্ডিং আমার না। আমার মোবাইল থেকে অন্য কেউও রিয়াজকে কল দেয়নি। রিয়াজ মামলা করুক, সমস্যা নেই।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবদুল খালেক বাদলকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন বলেন, ঘটনাটি কেউ আমাকে জানায়নি। এখনো কেউ অভিযোগও করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর ভবনীগঞ্জসহ সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে নির্বাচন হবে। এ ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান রনি ও আওয়ামী লীগের পার্থী ছাড়া আরও ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম মাস্টার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান ডালি, মামুনুর রশিদ ভূঁইয়া, সাবেক সহসভাপতি মোক্তার হোসেন বিপ্লব, ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত মোসলেহ উদ্দিন নিজামের স্ত্রী মমতাজ বেগম, বিএনপিপন্থী শাহ মোহাম্মদ এমরান ও জাহাঙ্গীর হোসেন। ৭ ডিসেম্বর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে নির্বাচন কমিশন।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ