ইয়াসের পর এবার ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রায় শাকবেড়িয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামের লঞ্চ ঘাটের পূর্ব পাশ দিয়ে পানি প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে দুটি গ্রাম। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে গাতির ঘেরি ও হরিহরপুর গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার। 

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে হরিহরপুর গ্রাম প্লাবিত হয়। এক সপ্তাহ আগে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিও টিউবে বালু ভরে সেখানে ফেলে। কিন্তু মাটির কাজ না করায় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে শাকবেড়িয়া নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে আবারও বেড়িবাঁধ ভেঙে হরিহরপুর ও গাতিরঘেরি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ধীরেস মাহত বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় সাত মাস শাকবেড়িয়া নদীর পানিতে তলিয়ে ছিলাম। সপ্তাহ খানেক আগে জিও টিউবে বালু ভরে ফেলার পর পানি মুক্ত হই।  কিন্তু পরবর্তীতে আর মাটির কাজ না করায় আবারও ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে গ্রামে পানি ঢুকেছে। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য হরষিত কুমার মন্ডল বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিয়াউর ট্রেডার্স দায়সারাভাবে কাজ করে কোনো রকমে সপ্তাহ খানেক আগে পানিমুক্ত করলেও মাটির কাজ না করায় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে শনিবার রাতে আবারও হরিহরপুর ও গাতিরঘেরি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।  

মেসার্স জিয়াউর ট্রেডার্সের প্রতিনিধি বাদশা মিয়া বলেন, আমরা সঠিকভাবে কাজ করছি। তবে নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভাঙনকবলিত স্থানের জিও টিউবের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় আবারও প্লাবিত হয়েছে। আগামীকাল থেকে আবার কাজ শুরু করব। ২-৪ দিনের মধ্যে গ্রাম পানিমুক্ত করতে পারব। 

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (ডিভিশন-২) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মশিউল আবেদীন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিয়াউল ট্রেডার্স ওই স্থানে সম্প্রতি জিও টিউবে বালু দিয়ে পানি প্রবেশ বন্ধ করেছে। কিন্তু মাটির কাজ করার আগে কপোতাক্ষ নদীতে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেয়ে জিও ব্যাগের নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে আবারও গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে অল্প কিছু দিনের মধ্যে ওই স্থানে কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের হরিহরপুর গ্রামের একটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। ফলে হরিহরপুর ও গাতিরঘেরি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। 

মোহাম্মদ মিলন/আরএআর