ফুলবাড়ীর ভেড়াম গ্রামে তখন গোলাগুলির শব্দ। ঝোপ-ঝাড়-জঙ্গলে লুকিয়ে হামলার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকি। কখনো হাঁটু গেড়ে আবার কখনো শুয়ে-গড়িয়ে এগিয়ে যাই। শরীরজুড়ে লতাপাতা, কাদামাটি আর ধুলাবালু মাখা। দূর থেকে হঠাৎ দেখে বোঝার উপায় নেই। আমার লক্ষ্য পাকিস্তানি সেনাদের খতম করা। খুব কাছাকাছি পৌঁছামাত্রই আক্রমণ শুরু করি। আমাদেরও পাল্টা আক্রমণ করে পাকিস্তানিরা।

চোখের সামনেই সহযোদ্ধা মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। নিথর দেহ। আমি তখনো চালিয়ে যাচ্ছি গুলি। হঠাৎ একটা কিছু অনুভব করলাম। তখনো বুঝতে পারিনি আমার দুই পা থেকে রক্ত ঝরছে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লুকিয়ে পড়লাম ধানখেতে। এটা ছিল গেরিলা যুদ্ধ। পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে এটিই ছিল আমার শেষ লড়াই। সেই দিনটি ছিল একাত্তরের ৩১ জুলাই।

লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার ৫০ বছরেও ফুলবাড়ীর ভেড়াম গ্রামে ভুলতে পারেননি অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন। ৭ নম্বর সেক্টরের অধীন ছিল দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী ও পাবনা। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা সাহসিকতার সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় করেন গেরিলা যুদ্ধ।

এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবার্ষিকীতে রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম আমজাদ হোসেন জানিয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের বিভীষিকাময় দিনগুলোর স্মৃতিমাখা কথাগুলো। বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে রণাঙ্গনের রক্তঝরা সেসব দিনের কথাগুলো তরুণ প্রজন্মকে জানাতে ঢাকা পোস্টের নিয়মিত আয়োজনে আজ থাকছে এই গেরিলা যোদ্ধার জীবনকাহিনি।

ছাত্রাবস্থা থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অনুসরণ করতেন আমজাদ হোসেন। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ শোনার পর নিজেকে আর স্থির রাখতে পারেননি। পরাধীনতার শিকল থেকে মুক্তিলাভে উদ্বুদ্ধ হতে থাকেন ক্ষণে ক্ষণে। বয়সটাও তার অনুকূলে। ১৭ ছুঁইছুঁই। পাক শাসকদের অন্যায়, অনাচার, নির্যাতন দেখতে দেখতে বড় হওয়া। তখন আমজাদের ছোট্ট বুকটা প্রতিবাদী হতে প্রশস্ত হতে থাকে।

মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর স্বৈরাচারী শাসন এবং শোষণে নিরস্ত্র বাঙালিদের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছিল। অনেক ধৈর্য আর সহ্যের পরিচয় দিয়েছে এ জাতি। কিন্তু যখন বাঙালিদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার প্রবণতা বাড়তে থাকে, তখনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তির সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ থাকে বাঙালি জাতি।

ঢাকা পোস্টকে আমজাদ হোসেন বলেন, সত্তরের নির্বাচনে বাঙালিদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা দেখে অবাক হয়েছিল বিশ্ব। শুধু টনক নড়েনি ইয়াহিয়া খানের। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তথা বাঙালিরা নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করেও শাসনের অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিলাম। ইয়াইয়া খান ডিসেম্বর মাসের ওই নির্বাচনকে কোনো তোয়াক্কা করেননি। বরং ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত নানা অযুহাতে কালক্ষেপণ করে ভেতরে ষড়যন্ত্রের ছক আঁকতে থাকেন।

কোনো রকমের আলোচনা বা বাঙালিদের দাবিদাওয়াকে থোড়াই কেয়ার করে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুঝে ফেলেন, পরিস্থিতি আমাদের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখানে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তাই সব দিক বিবেচনা করে তিনি ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে উপস্থাপন করেন স্বাধীনতার চূড়ান্ত ইঙ্গিতবাহী এক ঐতিহাসিক ভাষণ। যে ভাষণ আমাদের কচি মনে দাগ কেটেছিল। যে ভাষণ আমার মতো হাজারো কিশোর, তরুণ, যুবককে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমরা অনুভব করি, যুদ্ধই আমাদের একমাত্র মুক্তির পথ। অবশেষে পরিবারের সহযোগিতায় বেরিয়ে পড়ি। দেশ-মা-মাটিকে রক্ষা করতে অংশ নিই মুক্তিযুদ্ধে।

আমি ও আমাদের পরিবারের সবাই গ্রাম থেকে নানার বাড়িতে চলে আসি। সেখান থেকে যেদিন যুদ্ধে যাওয়ার জন্য বিদায় নিচ্ছিলাম। মনে হয়েছিল, আর কোনো দিন ফিরে আসতে পারব না। মা-বাবা, নানা-নানি, আত্মীয়স্বজন সবাই হু হু করে কাঁদতে থাকে। বাড়ির উঠানজুড়ে থাকা মানুষের অশ্রুসিক্ত চোখ আর চাপা কান্নার করুণ দৃশ্যের অবতারণা হয়। যেন বাড়ির উঠানে কারও লাশ পড়ে ছিল।

আমজাদ হোসেন বলেন, বিদায়বেলার পরিস্থিতি দেখে মনে হয়েছিল আমরা নামমাত্র জীবিত। আমাদের মরতেই হবে, জীবন নিয়ে যুদ্ধ থেকে ফেরার সুযোগ হবে না। আমারা ২০-২২ জন তরুণ-যুবক প্রস্তুত। পরিস্থিতি কোথায় যাবে কেউ জানি না। শুধু একটাই চিন্তা, আমরা পাকিস্তানিদের শাসনের বিরুদ্ধে লড়তে যাচ্ছি। আর আমাদের সেই চিন্তা মুহূর্তেই দূর হয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের কারণে।

রণক্ষেত্রে গেরিলা যুদ্ধ 
সবকিছুর মায়া ভুলে শুধু জীবনটা হাতে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে টগবটে কিশোর আমজাদ হোসেন প্রথমে ভারতে যান। সীমান্ত এলাকা হিলি থেকে একটু দূরে কামারপাড়া ক্যাম্প। সেখানে প্রথম প্রশিক্ষণ নিয়ে সাহসে সংগ্রামে আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠেন কিশোর আমজাদ। সেখানে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের নেতৃত্বে ছিলেন ফজলুর রহমান। যিনি পরবর্তী সময়ে মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হয়েছেন।

আমজাদ হোসেন বলেন, আমি প্রথমে কামারপাড়া ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। তখন কামারপাড়া ক্যাম্প কেবলই শুরু হয়েছে। সেখানে দিনাজপুরের সন্তান ফজলুর রহমানের সঙ্গে দেখা হয়। তার নেতৃত্বে প্রথমে ক্যাপ্টেন আনোয়ার, আবু সাইদের সহযোগিতায় ক্যাম্পে যোগ দিই। প্রশিক্ষণ শেষে শিলিগুড়িতে চলে যাই। সেখানে আমার ৫৫২ এফএফ নম্বর ছিল। ঐতিহাসিক এই নম্বর এখনো ভারতে রেজিস্টারভুক্ত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে। থ্রি নট থ্রি রাইফেল, স্টেনগান, এসএলআর, এসএমজিসহ বিভিন্ন অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ নিয়ে তৈরি হয়েছি। এদিকে অত্যাধুনিক অস্ত্রসহ সমরযুদ্ধে প্রশিক্ষিত ছিল পাকিস্তানি সেনারা। তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে অনেক কলাকৌশল জানা দরকার ছিল। এই প্রশিক্ষণে আমি জেনেছি সেসব কৌশল।

বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শেষে আমজাদ হোসেন ৭ নম্বর সেক্টরে যোগ দেন। তখন ওই সেক্টর কমান্ডার ছিলেন মেজর কাজী নুরুজ্জামান। অনেকে অদলবদল হলেও তিনি সেখানে দীর্ঘদিন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৭ নম্বর সেক্টর দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী ও পাবনা জেলা নিয়ে বিস্তৃত ছিল। তরঙ্গপুর ছিল এই সেক্টরের সদর দফতর। শুধুর দিকে মেজর নাজমুল হক সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। তিনি একটি দুর্ঘটনায় মারা গেলে সেক্টর কমান্ডার হিসেবে কাজী নুরুজ্জামান দায়িত্ব নেন।

আমজাদ হোসেন বলেন, কামারপাড়া, রায়গঞ্জ ও শিলিগুড়ি ক্যাম্পে উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। ৭ নম্বর সেক্টরের অধীনে টিম লিডার হিসেবে সরাসরি দিনাজপুর বড়গ্রাম, নিউটাউন ও রুদরানীসহ বিভিন্ন পাকিস্তানি ক্যাম্প ও স্থাপনার ওপরে গেরিলা আক্রমণ চালিয়েছি। যুদ্ধ শুরুর আগে পাকিস্তানিরা আমাদের অশান্তিতে রেখেছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর তারাই অশান্তির মধ্যে পড়ে যায়। আমরা তাদের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা শুরু করেছি। সব কষ্ট-ব্যথা বুকে চাপা দিয়ে একটার পর একটা অপারেশন চালিয়েছি। যেন মুক্তির নেশায় পাগল ছিলাম আমরা।

সেদিনের রোমহর্ষক দিনগুলো
চোখের সামনে সহযোদ্ধার মৃত্যু দেখেছেন। কখনো কখনো মন আঁতকে উঠেছে বাড়ির কথা ভেবে। পাকিস্তানি বাহিনীর বরবর্তা ও পাষবিক তাণ্ডবে কত দিন চোখে ঘুম নিয়ে কেটেছে, তার ইয়ত্তা নেই। সবকিছু ভুলেফেলে একটার পর একটা গ্রাম শত্রুমুক্ত করাই ছিল আমজাদের স্বপ্ন।

যুদ্ধাহত এই বীরসেনানী বলেন, যুদ্ধ মানেই অনেক রোমহর্ষক স্মৃতির সাক্ষী। আমি বিভিন্ন জায়গায় গেরিলা আক্রমণ চালিয়েছি। আমরা বন্দুক, গ্রেনেড, এলএমজিসহ বেশ কিছু অস্ত্র দিয়ে একটা ক্যাম্প হামলা করি। পাকিস্তানি বাহিনীও আমাদের লক্ষ্য করে পাল্টা হামলা চালাতে থাকে। তখন মারাত্মক একটা যুদ্ধাবস্থার তৈরি হয়। আমরা জানে বাঁচব কি না, এটা ছিল অনিশ্চিত। প্রাণপণে লড়াই চালিয়ে গিয়েছি। এমনও দিন গেছে শত্রুকে ঘায়েল করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একটা জায়গায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসে থাকতাম।

একাত্তরের ৩১ জুলাই ফুলবাড়ীর ভেড়াম গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হন আমজাদ। নিজের সেই কঠিন মুহূর্তের স্মৃতিচারণা করে বলেন, তুমুল যুদ্ধ চলছিল। আক্রমণ পাল্টা-আক্রমণ। চারদিকে গোলাগুলির বিকট শব্দ। আমার সহযোদ্ধা মোজাফফর পাশে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। নরম মাটিতে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকে। মোজাফফরের নিথর দেহের দিকে তাকিয়ে আমি গুলি চালাচ্ছি। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারিনি। চোখের সামনে সহকর্মী খয়রাত আলী পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়লেন। হঠাৎ একটা কিছু অনুভব করলাম। তখনো বুঝতে পারিনি আমার দুই পা থেকে রক্ত ঝরছে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় লুকিয়ে গেলাম ধানখেতে। পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে এটিই ছিল আমার শেষ লড়াই। পরে সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে ভারতের বালুরঘাট হাসপাতলে নিয়ে যান।

মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা ও প্রাপ্তিস্বীকার
জনসংখ্যাবহুল এই গরিব দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা করেছেন, সেটা অনেক বড় প্রাপ্তি বলে মনে করেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. এম আমজাদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে আমরা অনেক বেশি পেয়েছি, যা আমি কখনো কল্পনা করিনি। সরকারও আমাদের জন্য তা-ই করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধি, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের জন্য আবাসনসুবিধা ছাড়াও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। মৃত্যুর পরও যেভাবে রাষ্ট্রীয় সম্মান দেওয়া হয়, তা আমাদের অনেক বড় প্রাপ্তি।

মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ যেমন শোধ করার নয়, তেমনি সরকারিভাবে যে সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, তাও কোনো অংশে কম নয় বলে মনে করেন স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত এই বীর মুক্তিযোদ্ধা। তবে ভুয়া ব্যক্তিদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার দৌরাত্ম্য থামানোসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপশক্তির ব্যাপারে সরকারকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এসে চিকিৎসক হয়ে ওঠা
দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৮ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি লাভ করেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম আমজাদ হোসেন। এরপর ১৯৮৬ সালে তিনি অর্থেপেডিক বিষয়ে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন। চিকিৎসার সুবাদেই দেখা হয় আমেরিকান চিকিৎসক ডা. আরজে গাস্টের সঙ্গে। গাস্টের আহ্বানে সরকারি কাজের পাশাপাশি অবৈতনিকভাবে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

কর্মজীবনের প্রথমে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। এরপর তিনি সহকারী, সহযোগী ও অধ্যাপক হিসেবে নিটর, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে অধ্যাপক এবং বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০০৮ সালে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। তারপর থেকে ল্যাব এইড স্পেশালাইজড হাসপাতালে অর্থেপেডিক সার্জারি বিভাগে চিফ কনসালট্যান্ট হিসেবে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন।

অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অব অর্থেপেডিক সার্জারি অ্যান্ড ট্রমালোজির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অর্থপেডিক অ্যাসোসিয়েশন অব সার্ক কান্ট্রিজের সভাপতি হিসেবে আছেন। তিনি বাংলাদেশ অর্থপেডিক সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও ঢাকাস্থ দিনাজপুর জেলা কল্যাণ সমিতির দুই মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি চিরিরবন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে রয়েছেন।

গুণী এই চিকিৎসক ১৯৫৩ সালের ৫ জুলাই দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার দক্ষিণ সুখদেবপুর গ্রামে এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৮ সালে চিরিরবন্দর উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৭০ সালে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। তার বাবা মরহুম আব্দুল বাকী মন্ডল, মা আমেনা খাতুন। ডা. আমজাদ হোসেন ও ডা. শামীমা আমজাদ দম্পতির বড় ছেলে আজমত হোসেন সৈকত ইংল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। ছোট মেয়ে আফিয়া তাসনিম শর্মী ওয়াশিংটনের ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে কর্মরত।

এনএ