লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার মাতাব্বরহাট-সাহেবেরহাট সড়কটি পার্শ্ববর্তী মেঘনা নদীর সংযোগ খালে ভেঙে পড়ে ছয় মাস ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে আছে। এতে ওই এলাকার যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। হেঁটেও সড়কটি পার হবে, তেমন উপায়ও নেই।

চলাচল স্বাভাবিক করতে মেরামতের উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে না। এ সীমাহীন দুর্ভোগ আর কষ্ট সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল খায়ের দেখেও দেখেন না, এমন অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।

এদিকে ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের এ সড়কটি সাহেবেরহাট ইউপি কার্যালয়ে যাওয়ার প্রধান মাধ্যম ও জনবহুল। ভাঙা সড়কটি মেরামতের উদ্যোগে কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করা হচ্ছে না। উল্টো এটি এড়িয়েই চেয়ারম্যান আবুল খায়ের পার্শ্ববর্তী চরফলকনের সড়ক দিয়ে কার্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০১১ সালের পরে সাহেবেরহাট ইউনিয়নে কোনো নির্বাচন হয়নি। কৌশলে ভোট বন্ধ রেখে চেয়ারম্যান খায়ের বছরের পর বছর শাসন ও শোষণ করে আসছেন। এখানকার মানুষ যতই দুঃখ-কষ্ট ও দুর্ভোগে থাকুক, তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তিনি বসবাস করেন হাজিরহাট ইউনিয়নে। চলাচল ও ব্যবহার করেন ফলকন ইউনিয়নের রাস্তা। নিজ ইউনিয়নের রাস্তা ইচ্ছে করেই তিনি মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছেন না। রাস্তা না থাকায় ওই এলাকায় ছেলে-মেয়েদের বিয়ে দিতে অভিভাবকরা ভোগান্তিতে পড়েন। ইউনিয়নের বিপুল অংশ মেঘনায় ভেঙে গেছে। এ জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ আছে। এতে অপরিবর্তিত জনপ্রতিনিধিরা এলাকার উন্নয়নে কাজ করছেন না।

জানা গেছে, গত জুন মাসে অস্বাভাবিক জোয়ারে মাতাব্বরহাট-সাহেবেরহাট সড়কের একটি অংশ ভেঙে খালে পড়ে যায়। ওই সড়কের একটি কালভার্টের মুখের অংশ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এরপর থেকে যাতায়াতে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। এ সড়কের প্রায় ৩০০ মিটারই ভাঙা ও সরু হয়ে পড়েছে। এতে এলাকার কেউ অসুখে পড়লে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। কৃষকের উৎপাদিত ফসল হাটবাজারে নেওয়া যাচ্ছে না। শিশুরা স্কুলেও যেতে পারছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা সুজন কুমার দাস বলেন, জোয়ারে ভেঙে যাওয়ার পর বিষয়টি আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তখন তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে সড়কটি মেরামতের জন্য উদ্যোগ নিতে বলেছেন। কয়েক মাস পার হলেও তিনি এখনো কোনো উদ্যোগ নেননি। তার কোনো কষ্ট নেই, সব কষ্ট আমাদেরই।

সাহেবেরহাট ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার কামাল হোসেন বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছে বারবার সড়কটি মেরামতের ব্যাপারে বলেও কোনো সাড়া পাচ্ছি না। তারা বলে বরাদ্দ আসেনি। মূলত সড়কটি মেরামতে তাদের ইচ্ছে নেই। আন্তরিকতা আর ইচ্ছে থাকলেই জনগুরুত্বপূর্ণ কাজ জরুরি ভিত্তিতে করা সম্ভব।

সাহেবেরহাট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল খায়ের বলেন, সড়ক মেরামতের জন্য একটি প্রকল্প হাতে আছে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। বরাদ্দ না আসা পর্যন্ত আমি কীভাবে করব।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান বলেন, ওই সড়কটির বিষয়ে স্থানীয়রা আমাকে জানিয়েছেন। এটি আমার নজরে রয়েছে। সামনের বরাদ্দে প্রকল্প দিয়ে সড়কটি মেরামত করা হবে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এনএ