যেকোনো হাড়ের ব্যথায় ব্যবহার করবেন কট মাছের কাঁটা। ইনশাল্লাহ মন্ত্রের মতো কাজ করবে। আমরা বংশগতভাবে যুগ যুগ ধরে বিক্রি করে আসছি ব্যথানাশক এ মাছের কাঁটা।

এসব কথা বলেই মাছের কাঁটা বিক্রি করেন মাহমুদ নামের এক কবিরাজ। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় রাস্তায় গত শনিবার (৫ ডিসেম্বর) বাঁশের কঞ্চিতে কাঁটাগুলো দাঁড় করিয়ে রীতিমতো মজমা বসিয়েছিলেন তিনি। তার এ ধরনের বক্তব্য শুনে জড়ো হন অনেক মানুষ। তার কথা বিশ্বাস করে মাছের কাঁটাও কিনে নেন অনেকেই। ওই স্থানে জড়ো হওয়া অনেকেই বলছেন, মাছের কাঁটায় নাকি উপকারও পেয়েছেন! 

এ সময় জীবন নামে এক স্থানীয় দোকানদার মাহমুদকে বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে তার মাজার ব্যথাটা কমিয়ে দিতে। তখন মাহমুদ কাঁটাওয়ালা বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তার হাতে দুটি বাড়ি দিয়ে বলেন, কমবে, তবে মাছের কাঁটা কোমরে ব্যবহার করতে হবে। এক পর্যায়ে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। এর মধ্যে অনেকেই বলছেন, আমরাও কিনেছি। এ মাছের কাঁটা ‍‍অনেক উপকারে আসে! সব জায়গায়ই প্রতিটি কাঁটা বিক্রি হয় ২০ টাকায়।

মাহমুদ বলেন, যুগ যুগ ধরে আমরা বংশ পরম্পরায় এ কট মাছের কাঁটা বিক্রি করে আসছি। আমার দাদা ও বাবার পরে আমি নিজেই এখন বিক্রি করছি। এটি নিয়ে উপকৃত হচ্ছেন রোগীরা। কাইতন দিয়ে এ কাঁটা মাজায় বেঁধে দিলে যেকোনো ধরনের হাড়ের ব্যথা থাকবে না বলে দাবি করেন তিনি। 

তিনি আরো বলেন, আমার বাবার নাম দেলোয়ার। আমরা গজারিয়া উপজেলার গুয়াগাছিয়া বালুর মাঠ এলাকায় থাকি। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায়। ওইখানে থেকে মাছের কাঁটা বিক্রি করি। আমাদের পূর্বপুরুষ থেকেই এ ব্যবসা করে আসছি। 

তিনি আরোও বলেন, আমার বাবা দেলোয়ার হোসেন এ মাছের কাঁটাগুলো কলকাতা থেকে কিনে নিয়ে আসতেন। বর্তমানে আমি চট্টগ্রাম থেকে কিনে নিয়ে আসি।‌ তিনি দাবি করেন, এ মাছের কাঁটা সম্পূর্ণভাবে হাড়ের ব্যথা দূর করে। বাঁধতে হবে কোমরে। ব্যথা ভালো হলে অন্য আরেকজনকে দিয়ে দিতে বলি। তারও ব্যথা ভালো হবে। আমি ৫/৬ বছর ধরে এ ব্যবসা করে যাচ্ছি। প্রতিদিন ৭শ থেকে ৮শত টাকার কাঁটা বিক্রি করি। 

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আরএমও সাখাওয়াত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। এ বিষয়ে কোনো গবেষণাও নেই। আমি কিছু বলতে পারব না। ঢাকায় কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন।

মুন্সিগঞ্জের সাবেক সিভিল সার্জন আবুল কালাম আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছোটবেলায় আমরাও মাছের কাটা বিক্রি করতে দেখেছি। তবে এটা নিয়ে তো আমাদের কোনো গবেষণা নেই। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে বলে আমার জানা নেই।

ব.ম শামীম/এমএএস