বাগেরহাটের কচুয়ায় পূর্বশত্রুতার জেরে ফেরদাউস শেখ (১৮) নামের এক যুবককে কলার সঙ্গে সুই খাওয়ানোর অভিযোগ উঠেছে। খাদ্যনালিতে সুই নিয়ে ২২ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন হতদরিদ্র ওই যুবক। এ ঘটনায় ফেরদাউসের চাচাতো ভাই নিজাম শেখ কচুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফেরদাউস শেখ কচুয়া উপজেলার সোনাকুড় গ্রামের জামাল শেখের ছেলে।

নিজাম শেখ বলেন, জমিজমা নিয়ে পূর্বশত্রুতার জেরে গত ১৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমার ছোট চাচা জামাল শেখের ছেলে ফেরদাউস শেখকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে বেধড়ক মারধর করে প্রতিবেশী এশারাত শেখ, বাদশা শেখ, মোস্তফা শেখ ও হাবিব শেখ। পরে পাকা কলার ভেতরে সুই ঢুকিয়ে জোর করে ফেরদাউসকে খাওয়ানো হয়। এ সময় ফেরদাউসের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে, তারা ফেরদাউসকে ছেড়ে দেয়।

আহত অবস্থায় ফেরদাউসকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন। খুলনা মেডিকেল কলেজ, খালিসপুর ক্লিনিকসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে টাকার অভাবে সুচিকিৎসা না পেয়ে ৮ ডিসেম্বর খুলনা শহরের সাউথজোন ক্লিনিকে ফেরদাউসের অপারেশন করানো হয়। এখনো আমার ভাই সুস্থ হয়নি। চিকিৎসকরা বলেছেন তিন মাস পর আবারও একটি অপারেশন করা লাগবে।

ফেরদাউসের আরেক চাচাতো ভাই ইব্রাহিম শেখ বলেন, খুব কষ্ট করে ভাইয়ের চিকিৎসা করাচ্ছি। যার ফলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রেও পিছিয়ে রয়েছি। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) মারধরকারীদের লোকজন ফেরদাউসকে দেখতে হাসপাতালে এসেছিলেন। চিকিৎসার জন্য তারা কিছু টাকাও দিয়েছেন। সুই বের করার জন্য অপারেশন করা হয়েছে। তারপরও আমার ভাই সুস্থ হয়নি। আবারও অপারেশন লাগবে, বাঁচবে কি না জানি না। আমরা ভাইয়ের সুস্থতাসহ, মারধরকারীদের বিচার চাই।

অভিযুক্তদের মধ্যে এশারাত শেখের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ফেরদাউস শেখদের সঙ্গে আমাদের জমিজমা-সংক্রান্ত শত্রুতা রয়েছে। তবে সুই খাওয়ানোর ঘটনায় আমরা জড়িত নই। তাহলে চিকিৎসার ব্যয় বহনের জন্য টাকা দিলেন কেন, জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে আবার ফোন দিলে রিসিভ করেননি।

কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ফেরদাউসের পরিবার আমাদের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তানজীম আহমেদ/এনএ