নিজ ফ্ল্যাটে এক তরুণীকে নিয়ে অসামাজিক কাজ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন রাজশাহীর গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান সোহেল রানা। থানায় নেওয়ার পথে পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যান তিনি। বৃহস্পতিবার (০৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার পর নগরীর নিউমার্কেট সংলগ্ন থিম ওমর প্লাজায় এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনার পরদিন শুক্রবার ইউনিয়নের মাদারপুর ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় ইসলামি জলসায় প্রধান অতিথি হিসেবে অংশ নেন সোহেল রানা। নবনির্বাচিত চেয়ারম্যানের এমন কাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুসল্লিরা।

সোহেল রানা গোদাগাড়ীর মাটিকাটা ইউনিয়নের উজানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি থিম ওমর প্লাজায় আবাসিক ফ্ল্যাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। পরিবারের সদস্যদের অনুপস্থিতে তিনি ওই তরুণীকে ফ্ল্যাটে নিয়ে যান।

জানা গেছে, পুলিশের হাত থেকে পালিয়ে সোহেল এলাকায় ফিরলেও ধরা পড়ে যান তরুণী। অসামাজিক কার্যকলাপের মামলায় শুক্রবার সকালে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় তাদের দুজনের নামেই মামলা হয়েছে।

নগর পুলিশের শিরোইল ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর আলী জানান, অসামাজিক কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে থিম ওমর প্লাজায় ফ্ল্যাট থেকে এক তরুণীসহ সোহেল রানাকে আটক করে পুলিশ। ফ্ল্যাট থেকে বের করে থানায় নেওয়ার সময় সোহেল পুলিশ সদস্যদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যান।

পুলিশের জেরার মুখে ওই তরুণী স্বীকার করেন পলাতক সোহেলের সঙ্গে আসামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই তাদের দুজনের নামে বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় শুক্রবার গ্রেফতার দেখিয়ে তরুণীকে আদালতে পাঠানো হয়। তবে সোহেল রানা পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে এলাকাবাসী জানান, সোহেল রানার বাবা মজিবর রহমান এক সময় চোরাচালানে যুক্ত ছিলেন। বাবার হাত ধরেই চোরাচালান ও মাদক ব্যবসায় যুক্ত হন সোহেল। মাদক কারবারে যুক্ত হওয়ার আগে তিনি হোটেল কর্মচারী ছিলেন। যাত্রীবাহী বাসে চালকের সহকারীও ছিলেন দীর্ঘদিন। মাদক ব্যবসায় যুক্ত হওয়ার পর রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন সোহেল রানা।

রাজশাহী শহরে তিনটি এবং গোদাগাড়ী উপজেলা সদরে দুটি বিলাসবহুল বাড়ির মালিক তিনি। রাজশাহী শহরে রয়েছে তিনটি দোকান। ধানি জমি কিনেছেন দেড়শ বিঘার ওপরে। 

সর্বশেষ গত ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাটিকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সোহেল। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ছিলেন। বিদ্রোহী হয়ে ভোটে নামলেও দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। উল্টো আওয়ামী লীগ নেতারা তার পক্ষে প্রকাশ্যে কাজ করেছেন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি