নওগাঁর মহাদেবপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে নাসির উদ্দীন ওরফে নান্নু নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। 

সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক এবিএম গোলাম রসুল এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত নাসির উদ্দীন জেলার মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী সরকারি কৌঁসুলী সঞ্জীব সরকার এবং আসামিপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী এমরান হাসান চৌধুরী।

মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে নাসির উদ্দীনের সঙ্গে স্বরসতীপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের মেয়ে পারুল আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ১১ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। ঘটনার ১০ মাস আগে কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামের ময়নুদ্দিনের মেয়ে শারমিন আক্তারকে গোপনে বিয়ে করেন নাসির। পারুল দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানার পর স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয়। এই ঘটনার জেরে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।

পারিারিক কলহের জেরে পারুল আক্তারকে মাঝেমধ্যেই শারীরিক নির্যাতন করতেন স্বামী নাসির। ২০১৮ সালের ১২ জুন রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৭টার কোনো এক সময় নাসির তার স্ত্রী পারুলকে ঘাড় মটকিয়ে ও বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। স্ত্রীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের চেষ্টা করেন।

এ ঘটনায় মৃত পারুল মামা আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে মহাদেবপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, পারুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। 

পরবর্তীতে আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন আসামি নাসির উদ্দীন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তশেষে ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর নাসির উদ্দীনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ১৪ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করা হয়।

মো. দেলোয়ার হোসেন/আরআই