বগুড়ার আদমদীঘিতে বিআইআরএস প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত পাঁচ শ্রমিকের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দীন মরদেহ হস্তান্তর করেন। 

নিহতরা হলেন- উপজেলার কমল দোগাছী এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে সিহাব হোসেন (১৪), পালোয়ানপাড়া এলাকার হাসান আলীর ছেলে ইমন আলী মন্ডল (১৫), ঘোরাঘাট এলাকার মৃত আফছার উদ্দীনের ছেলে আব্দুল খালেক (৫০), ছাতনী ঢেকড়া এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে বেলাল হোসেন (৫৫) ও সান্দিড়া এলাকার নাছির উদ্দীনের ছেলে শাহজাহান আলী (২৮)।

কারখানার হিসাবরক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু বলেন, ওই পাঁচজন শ্রমিক কারখানার উত্তর দিকে মেশিনের সহকারী হিসেবে কাজ করছিল। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেশিন চলাকালীন অবস্থায় আগুনের সূত্রপাত ঘটলে সবাই বেড়িয়ে আসে। ওই পাঁচজনও বেড়িয়ে আসছিল। হঠাৎ প্রবেশ গেটে আসার পর কাজের জায়গায় শীতের কাপড় রাখা আছে বলে নিতে যায়। শীতের কাপড় নিতে গিয়ে আটকে পড়ে তারা। তার কিছুক্ষণ পর আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আগুনে দগ্ধ হয়ে তারা মারা যায়। ওই পাঁচ শ্রমিকের মরদেহ দাফনের জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।

কারখানার প্লেট অপারেটর বাঁধন বলেন, ঘটনার সময় আমি কার্টিং মেশিন চালাইতে ছিলাম। আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত মেশিন বন্ধ করে দিয়ে আগুন নিভানোর জন্য চেষ্টা করি। পরে দেখি আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। তখন আমি বের হই। আমার পেছনে কয়েকজন ছিল তারাও বের হয়ে চলে আসে। তবে কীভাবে আগুন লেগেছে তা আমার জানা নেই।

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দীন বলেন, শারীরিক গঠনসহ বিভিন্ন আলামত দেখে স্বজনরা নিহতদের মরদেহ শনাক্ত করেন। নিহত পাঁচজনের মরদেহ স্বজনরা আলাদাভাবে শনাক্ত করায় কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। পরে পরিবারের কাছে তাদের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ইউডি মামলা করা হয়েছে। 

আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের হবির মোড় সংলগ্ন এলাকায় বিআইআরএস প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে কারখানা তৈরি করা হয়। কারখানাটির মালিক সান্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্ট। এখানে মূলত ওয়ান টাইম প্লেট ও গ্লাস উৎপাদন করা হয়। দিনরাত মিলে ৭৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরি করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন।

দেলোয়ার হোসেন/আরএআর